স্বামী যদি স্ত্রীকে দ্বীনের জ্ঞার্নাজনে নিষেধ করে তাহলে কী করণীয়?

No photo description available.

স্বামী যদি স্ত্রীকে দ্বীনের জ্ঞার্নাজনে নিষেধ করে তাহলে কী করণীয়?

প্রশ্ন:স্বামী যদি স্ত্রীকে দীনি ইলম অর্জন করতে নিষেধ করে আর বলে যে, এত বেশি জানার দরকার নেই। স্বামী চায় না স্ত্রীর তার চেয়ে বেশি জানুক বা বুঝুক। এ ক্ষেত্রে স্বামীকে না জানিয়ে ইলম অর্জন করলে কি স্ত্রীর পাপ হবে?

উত্তর:
কোন স্বামীর জন্য তার স্ত্রীকে ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞানার্জনে বাধা দেয়া বৈধ নয়। বরং তার জন্য আবশ্যক হল, সে নিজে তার স্ত্রীকে দ্বীন সম্পর্কে জ্ঞান দান করবে। নিজে না পারলে অন্যভাবে ইলম অর্জনে উৎসাহিত করবে। কেননা আল্লাহ তাআলা বলেন:
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا قُوا أَنفُسَكُمْ وَأَهْلِيكُمْ نَارًا
"হে মুমিনগণ, তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা কর।" (সূরা তাহরীম: ৬)

আর এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, দ্বীন ইলম অর্জন করা জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচার অন্যতম শ্রেষ্ঠ মাধ্যম।


কিন্তু স্বামী যদি তার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন না করে উল্টা তার স্ত্রীকে দ্বীনী ইলম অন্বেষণে বাধা দেয় বা অনুৎসাহিত করে তাহলে এ ক্ষেত্রে তার নিষেধাজ্ঞা মান্য করা স্ত্রীর জন্য আবশ্যক নয়। কারণ ইলম অন্বেষণ করা আল্লাহর পক্ষ থেকে ফরজ। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, 
طلب العلم فريضة على كل مسلم
"ইলম অন্বেষণ করা প্রত্যেক মুসলিমের জন্য ফরয।"

আর আল্লাহর অবাধ্যতা করে সৃষ্টির আনুগত্য করা জায়েয নয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
لاَ طَاعَةَ في مَعْصِيَةِ الله ، إِنَّمَا الطَّاعَةُ فِي المَعْرُوفِ ."স্রষ্টার অবাধ্যতা করে সৃষ্টির আনুগত্য করা বৈধ নয়। আনুগত্য হবে কেবল ভালো কাজে।।"(সহীহ বুখারী হা/৬৮৩০ ও মুসলিম হা/১৮৪০)

তবে এ ক্ষেত্রে স্ত্রীর জন্য আবশ্যক হল, ইলম চর্চা করতে গিয়ে যেন স্বামীর হক নষ্ট না হয় বা বাড়ির প্রয়োজনীয় কাজ-কর্মে বাধা সৃষ্টি না হয় অথবা এমন পন্থা অবলম্বন না করা হয় যা তাকে ফিতনার দিকে টেনে নিয়ে যায়। 

সুতরাং জ্ঞানান্বেষণে আগ্রহী স্ত্রীর জন্য করণীয় হল, স্বামীকে জ্ঞানার্জনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বুঝানোর চেষ্টা করার পাশাপাশি উপরোক্ত বিষয়গুলো লক্ষ রেখে যথাসাধ্য দ্বীনের জ্ঞান চর্চা অব্যাহত রাখা। স্বামীকে না জানিয়ে ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করলেও ইনশাআল্লাহ তার কোন গুনাহ হবে না। আল্লাহ তাওফিক দান করুন। আমীন।


উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আবর

No comments

Theme images by konradlew. Powered by Blogger.