আল্লাহ্ ছাড়া কোন উপাস্য নেই’- এটাই কি কালিমাহর সঠিক অর্থ ?

Related image


পরম করুণাময় অসীম দয়ালু মহান আল্লাহর নামে শুরু করছি।
যাবতীয় প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্য। যিনি বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি সত্য পথ প্রকাশিত হওয়ার পরও রসূলের বিরোধিতা করে এবং মু’মিনদের (সালাফদের) পথ বাদ দিয়ে ভিন্ন পথ অনুসরণ করে, আমি তাকে সে পথেই ফিরাব যে পথে সে ফিরে যায়, আর তাকে দগ্ধ করব জাহান্নামে, কত মন্দই না সে আবাস!’’ [সূরাহ্ নিসাঃ ১১৫]
দয়া ও শান্তি অবতীর্ণ হোক প্রিয় নাবী মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহর প্রতি। যিনি বলেছেন, ‘‘বানী ইসরাঈল ৭২ দলে বিভক্ত হয়েছিল। আমার উম্মত ৭৩ দলে বিভক্ত হবে। শুধু একটি দল ছাড়া তাদের সবাই জাহান্নামী হবে। সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! সে দল কোনটি ? তিনি বললেন, ‘আমি ও আমার সাহাবীগণ যার উপর প্রতিষ্ঠিত’।’’ [সুনানুত তিরমীযী, হা/২৬৪১; সনদঃ হাসান]
অবতরণিকাঃ
কিন্তু অত্যন্ত দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় হলেও সত্য এই যে, অধিকাংশ তথাকথিত মুসলিম এর সঠিক অর্থ সম্পর্কে অবগত নয়। এই কারণে মুসলিম সমাজে কালিমাহর অনেক বাত্বিল অর্থ প্রচলিত রয়েছে। সেই অর্থগুলোর অন্যতম একটি হল- ‘আল্লাহ্ ছাড়া কোন উপাস্য নেই’।
তাওহীদী বাক্য ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ হচ্ছে জান্নাতের চাবি। চাবির যেমন কিছু দাঁত আছে, এই মহান বাক্যটিরও তেমন কিছু শর্ত আছে। শর্ত পূরণ না করলে এই চাবি অকেজো প্রমাণিত হবে, কেননা এর তো দাঁতই নেই! তো এই বাক্যের প্রথম শর্ত হল- এর অর্থ সম্পর্কে জানা। যে ব্যক্তি কালিমাহর অর্থের সঠিক বুঝ সম্পর্কে অবগত নয়, সে মুসলিম নয়।
কিছুদিন আগেও বেশ কয়েকজন স্বল্প ও মোটাবুদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তিকে এই নিয়ে বাত্বিলের পক্ষে বিতর্ক করতে দেখলাম। দেখলাম ‘ইলমী দরিয়ায় মিসকীনতুল্য কিছু ব্যক্তিকে, যারা কিনা মূর্খের মত ঠুনকো যুক্তি দিয়ে নিজেদের বাত্বিল অবস্থানকে ডিফেন্ড করছিল। তাদের এই বিভ্রান্তিকর কথাবার্তায় বাত্বিল যেন হক্বকে ছাপিয়ে উঠতে যাচ্ছিল। আর তাই প্রকৃত হক্বকে ইযহার করার মানসে এই লেখাটির অবতারণা।
অনেক ব্যক্তি এটাই উপলব্ধি করতে পারেনা যে, এই অর্থটি মারাত্মক ভুল এবং বাত্বিল অর্থ। যার ফলে নানারকম ইবলিসী যুক্তি এবং হঠকারিতা প্রদর্শন করে সঠিক অর্থটি গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করে। আর তাদের ঐ ইবলিসী যুক্তিগুলো দেখে সরলমনা সালাফী ভাইয়েরা শুবহাতে (সংশয়ে) পতিত হন। বক্ষ্যমাণ নিবন্ধটিতে আমরা ধারাবাহিকভাবে এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করব, ইনশাআল্লাহ্। বিষয়গুলো হল:- ক. যে কারণে আলোচ্য অর্থটি ভুল খ. এ ব্যাপারে উম্মাহর শ্রেষ্ঠ ‘আলিমদের বক্তব্য গ. এ সংক্রান্ত কিছু শুবহাতের (সংশয়) জবাব
এ অর্থ বাত্বিল। কেননা এর মানে হবে প্রত্যেক হক্ব অথবা বাত্বিল উপাস্যই আল্লাহ্। বিষয়টি সামনের আলোচনা পড়লেই স্পষ্ট হয়ে যাবে যে, কেন এর মানে হবে প্রত্যেক হক্ব অথবা বাত্বিল উপাস্যই আল্লাহ্।
প্রিয় পাঠক, বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আমরা আরবি ব্যাকরণের কিছু টার্ম নিয়ে কথা বলেছি। কারো বুঝতে সমস্যা হলে, ব্যাকরণগত আলোচনা নির্বিঘ্নে এড়িয়ে যেতে পারেন। তারপরেও আশা করি, আলোচনাটি দুর্বোধ্য ও অসুখকর মনে হবে না। বারাকাল্লাহু ফী ‘ইলমিকুম। প্রিয় পাঠক, তাহলে চলুন, শুরু করে দিই আমাদের আলোচনা। আল্লাহ্ আপনাদের উপর রহম করুন, আর আমাদেরকেও। যে কারণে আলোচ্য অর্থটি ভুলঃ কালিমাহ্ ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ ‘র সঠিক অর্থ হল ‘আল্লাহ্ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই’। ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ ‘র অনেক বা-ত্বিল অর্থও রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম প্রসিদ্ধ অর্থ হল- ‘আল্লাহ্ ছাড়া কোন উপাস্য নেই’।
‘‘এই অধ্যায়ে খবর (বিধেয়) বিলুপ্ত হওয়ার ঘটনা বিপুল পরিমাণে রয়েছে, যখন তা বিলুপ্তি সত্ত্বেও তার উদ্দেশ্য সুস্পষ্ট থাকে।’’
‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ বাক্যটির বিশ্লেষণ হল- এখানে ‘লা’ হচ্ছে লায়ে নাফী জিনস (জাতি বা শ্রেণিকে নিষিদ্ধকারী লা)। ‘ইলাহা’ হল এই ‘লা’ এর ইসম (মুবতাদা বা উদ্দেশ্য), আর এখানে খবর (বিধেয়) গোপন আছে। আরবরা অনেক সময় এরূপভাবে অনেক শব্দ গোপন বা উহ্য করে থাকে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, কেউ বলল, ‘অ্যাই, খালিদ কী করছে এখন ?’ উত্তরে বলা হল, ‘খেলছে’। এখানে খালিদ শব্দটি গোপন করা হল। বিশেষ করে লায়ে নাফী জিনসের খবর (বিধেয়) গোপন থাকে। আর এটা তখনই করা হয়, যখন খবরটি শ্রোতার কাছে সুবিদিত থাকে। যেমন নাহূশাস্ত্রের ইমাম ইবনু মালিক (রহিমাহুল্লাহ্) বলেছেন, وَشَاعَ فِي ذَا البَابِ إِسْقَاطُ الخَبَرْ ~~ إِذَا المُرَادُ مَعَ سُقُوْطِهِ ظَهَرْ যখন খবর (বিধেয়) বিলুপ্ত করার পরও তার উদ্দেশ্য স্পষ্ট থাকে, তখন খবরকে বিলুপ্ত করে দেওয়া হয়।
[ইমাম ইবনু ‘উছাইমীন (রহিমাহুল্লাহ্), শারহু আলফিয়্যাতি ইবনি মালিক, খণ্ডঃ ২; পৃষ্ঠাঃ ১২৫; মাকতাবাতুর রুশদ, রিয়াদ্ব (রিয়াদ) ছাপা; সনঃ ১৪৩৪ হিজরী (১ম প্রকাশ)]
ইমাম ইবনু ‘উছাইমীন (রহিমাহুল্লাহ্) পূর্বোক্ত পঙক্তিটির ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছেন, ‘‘লায়ে নাফী জিনসের অধ্যায়ে প্রচুর পরিমাণে খবর (বিধেয়) বিলুপ্ত হয়। কিন্তু তা একটি শর্তানুযায়ী হতে হবে। আর তা হল, যখন খবর বিলুপ্তি সত্ত্বেও বাক্যের উদ্দেশ্য সুস্পষ্ট থাকে। এর উদাহরণ হচ্ছে, একথা বলা হল যে, ‘হাল ফিল বাইতি মিন রজুলিন ?’ তথা ‘বাসায় কি লোক আছে ?’ উত্তরে তুমি বলবে, ‘লা রজুলা’ তথা ‘কোন লোক নেই’। অর্থাৎ, ‘ফিল বাইত’ বা ‘বাসায়’। অনুরূপভাবে যে ব্যক্তি কোন রোগীকে দেখতে যায়, সে বলে, ‘লা বা’সা’ তথা ‘কোন সমস্যা নেই’। অর্থাৎ, ‘‘লা বা’সা ‘আলাইকা’’ বা ‘এতে তোমার কোন সমস্যা নেই’। একইভাবে মুফতী সাহেব প্রশ্নকারীকে বলেন, ‘লা হারাজ’ তথা ‘কোন ক্ষতি নেই’। অর্থাৎ, ‘‘লা হারাজা ‘আলাইক’’ বা ‘এতে তোমার কোন ক্ষতি নেই’। যেমনভাবে নাবী (স্বল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে ‘ঈদের দিন হাজ্জের কর্মাবলিতে কোন কাজ পূর্বে বা পরে করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে, তিনি বলেন, ‘লা হারাজ’। (স্বহীহ্ বুখারী, হা/৮৩) অর্থাৎ, ‘‘লা হারাজা ‘আলাইক’’ বা ‘এতে তোমার কোন ক্ষতি নেই’।’’
অর্থাৎ, উপাস্য অনেক রয়েছে। আল্লাহ্ ছাড়াও অনেক উপাস্য রয়েছে। কিন্তু এগুলো ভ্রান্ত বা মিথ্যা উপাস্য। পক্ষান্তরে আল্লাহ্ই একমাত্র সত্য উপাস্য। তিনিই একমাত্র উপাসনার যোগ্য। আল্লাহ্কে ছাড়া যাদের উপাসনা করা হয় তারা অযোগ্য উপাস্য। স্বয়ং আল্লাহ্ ক্বুরআনুল কারীমের অসংখ্য আয়াতে অন্যান্য উপাস্যের স্বীকৃতি দিয়েছেন। তার মধ্যে কয়েকটি আয়াত নিম্নে উল্লেখ করছি-
একইভাবে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ বাক্যটিতেও খবর তথা বিধেয় উহ্য রয়েছে। আর ‘লা’ এর উহ্য খবর (বিধেয়) হল- ‘হাক্বক্বুন’। অর্থাৎ, কালিমাহ্ হল ‘লা ইলাহা (অথবা মা‘বূদা) হাক্বক্বুন ইল্লাল্লাহ্’। অর্থ- ‘আল্লাহ্ ছাড়া কোন প্রকৃত বা সত্য উপাস্য নেই’। কিন্তু যখন এর অনুবাদ করা হবে ‘আল্লাহ্ ছাড়া কোন উপাস্য নেই’, তখন তা মারাত্মক ভুল হবে। আর এটা বাস্তবতারও পরিপন্থী। কেননা আমরা জানি যে, এ পৃথিবীতে মানুষ অনেক কিছুর উপাসনা করে। অর্থাৎ, উপাস্য অনেক..! লক্ষ-কোটি উপাস্য রয়েছে..!! যেহেতু মানুষের মধ্যে কেউ উপাসনা করে চন্দ্রের, কেউ সূর্যের, কেউ নক্ষত্রের, কেউ অগ্নির, কেউ গাছের, কেউ দূর্গার, কেউ দর্গার, কেউ খাম্বার, এমনকি কেউ কেউ লিঙ্গ পূজাও করে থাকে..!!! আল ‘ইয়াযু বিল্লাহ্। ১/মহান আল্লাহ্ বলেছেন, لَا تَجْعَلْ مَعَ اللَّهِ إِلَٰهًا آخَرَ فَتَقْعُدَ مَذْمُومًا مَخْذُولًا. “আল্লাহর সঙ্গে অন্য কোন উপাস্য সাব্যস্ত করো না; সাব্যস্ত করলে নিন্দিত ও লাঞ্ছিত হয়ে যাবে।” [সূরাহ্ ইসরা/বানী ইসরাঈলঃ ২২] ২/মহান আল্লাহ্ আরো বলেছেন, وَمَنْ يَدْعُ مَعَ اللَّهِ إِلَٰهًا آخَرَ لَا بُرْهَانَ لَهُ بِهِ. “যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে অন্য উপাস্যকে ডাকে,এই বিষয়ে তার নিকট কোন সুস্পষ্ট প্রমাণ নেই।” [সূরাহ্ মু’মিনূনঃ ১১৭] ৩/তিনি আরো বলেছেন, وَلَا تَدْعُ مَعَ اللَّهِ إِلَٰهًا آخَرَ ۘ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ.
’’ومعناها: لا معبود بحق إلا الله وحده - ((لا إله)) نافيا جميع ما يعبد من دون الله،((إلا الله)) مثبتا العبادة لله وحده لا شريك له في عبادته كما انه لا شريك له فى ملكه.‘‘
“তুমি আল্লাহর সঙ্গে অন্য উপাস্যকে ডেকো না।” [সূরাহ্ ক্বস্বাস্বঃ ৮৮] এই মর্মের আয়াত আরো অনেক আছে। যাইহোক, উপরিউক্ত আয়াতগুলো দ্বারা স্পষ্টরূপে প্রতীয়মান হয় যে, আল্লাহ্ ছাড়া আরো উপাস্য আছে। যেহেতু স্বয়ং তিনিই এ বিষয়ে স্বীকৃতি দিলেন। সুতরাং কিভাবে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ ‘র অর্থ হতে পারে ‘আল্লাহ্ ছাড়া কোন উপাস্য নেই’ ? বরং বাস্তবতা এই যে, আল্লাহ্ ব্যতীত আরো অসংখ্য উপাস্য আছে। কিন্তু সেই উপাস্যগুলো মিথ্যা, অযোগ্য এবং বাত্বিল উপাস্য। কেবলমাত্র আল্লাহ্ই সত্য উপাস্য। স্বয়ং আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন, ذَٰلِكَ بِأَنَّ اللَّهَ هُوَ الْحَقُّ وَأَنَّ مَا يَدْعُونَ مِنْ دُونِهِ هُوَ الْبَاطِلُ وَأَنَّ اللَّهَ هُوَ الْعَلِيُّ الْكَبِيرُ. “এটা এজন্য যে, আল্লাহ্, তিনিই সত্য এবং তারা তাঁর পরিবর্তে যাকে ডাকে তাই তো অসত্য ও ভ্রান্ত; আর নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সুউচ্চ ও সুমহান।” [সূরাহ্ হাজ্জঃ ৬২]
আলিমদের বক্তব্যঃ ১ম বক্তব্য দ্বাদশ হিজরী শতাব্দীর মুজাদ্দিদ তাওহীদ ও সুন্নাহর পৃষ্ঠপোষক, শির্ক ও বিদ‘আহর নির্বাপক শাইখুল ইসলাম ইমাম মুহাম্মাদ বিন ‘আব্দুল ওয়াহ্হাব বিন সুলাইমান আত তামীমী আন নাজদী (রহিমাহুল্লাহ্) [মৃতঃ ১২০৬ হিঃ/১৭৯১ খ্রিঃ] বলেছেন,
’’ﻣﻌﻨﻰ ﺍﻟﺸﻬﺎﺩﺓ ﺃﻥ ﻳﺸﻬﺪ ﺑﻠﺴﺎﻧﻪ ﻭﺑﻘﻠﺒﻪ ، ﺃﻧﻪ ﻻ ﻣﻌﺒﻮﺩ ﺣﻖٌ ﺇﻟﻰ ﺍﻟﻠﻪ ، ﻳﺸﻬﺪ ﺑﻠﺴﺎﻧﻪ ﻭﻳﺆﻣﻦ ﺑﻘﻠﺒﻪ ﺃﻧﻪ ﻻ ﺇﻟﻪ ﺇﻻ ﺍﻟﻠﻪ ، ﻳﻌﻨﻲ ﻻ ﻣﻌﺒﻮﺩ ﺣﻖ ﺇﻻ ﺍﻟﻠﻪ ، ﻭﺃﻥ ﻣﺎ ﻋﺒﺪﻩ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﻣﻦ ﺩﻭﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﻣﻦ ﺃﺻﻨﺎﻡ ﺃﻭ ﺃﻣﻮﺍﺕ ﺃﻭ ﺃﺷﺠﺎﺭ ﺃﻭ ﺃﺣﺠﺎﺭ ﺃﻭ ﻣﻼﺋﻜﺔ ﺃﻭ ﻏﻴﺮﻫﻢ ﻛﻠﻪ ﺑﺎﻃﻞ ، ﻛﻤﺎ ﻗﺎﻝ ﺗﻌﺎﻟﻰ : ((ذَٰلِكَ بِأَنَّ اللَّهَ هُوَ الْحَقُّ وَأَنَّ مَا يَدْعُونَ مِنْ دُونِهِ هُوَ الْبَاطِلُ.))
‘‘কালিমাহ্ ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ ‘র অর্থ হচ্ছে, ‘‘লা মা‘বূদা বিহাক্বক্বিন ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহ্’’ তথা ‘একমাত্র আল্লাহ্ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই’। ‘লা ইলাহা’ তথা ‘কোন সত্য উপাস্য নেই’- এর দ্বারা আল্লাহ্ ছাড়া অন্য যা কিছুর উপাসনা করা হয় তা সম্পূর্ণরূপে নাকচ করা হয়েছে। আর ‘ইল্লাল্লাহ্’ তথা ‘তবে আল্লাহ্ ছাড়া’- এর দ্বারা উপাসনা (‘ইবাদত) দৃঢ়তার সঙ্গে একমাত্র আল্লাহর জন্যই সাব্যস্ত করা হয়েছে। তাঁর রাজত্বে যেমন তাঁর কোন অংশীদার নেই, তেমনি তাঁর উপাসনার ক্ষেত্রেও তাঁর কোন অংশীদার থাকতে পারে না।’’ [ইমাম মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহ্হাব আন নাজদী (রহিমাহুল্লাহ্), আল উস্বূলুছ ছালাছাহ্ ওয়া আদিল্লাতুহা; সৌদি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে বাদশাহ ফাহাদ লাইব্রেরি কর্তৃক প্রকাশিত; সনঃ ১৪২০ হিজরী (১০ম প্রকাশ)] ২য় বক্তব্য বিগত শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ্ সাবেক গ্র্যান্ড মুফতী আশ শাইখুল ‘আল্লামাহ্ আল ফাক্বীহুল মুজতাহিদ ইমাম ‘আব্দুল ‘আঝীঝ বিন ‘আব্দুল্লাহ্ বিন বাঝ (রহিমাহুল্লাহ্) [মৃতঃ ১৪২০ হিঃ/১৯৯৯ খ্রিঃ] বলেছেন, ﻫﺬﺍ ﻣﻌﻨﻰ ﺷﻬﺎﺩﺓ ﺃﻥ ﻻ ﺇﻟﻪ ﺇﻻ ﻟﻠﻪ ، ﺃﻥ ﺗﺸﻬﺪ ﻋﻦ ﻋﻠﻢ ﻭﻳﻘﻴﻦ ﻭﺻﺪﻕ ﺃﻧﻪ ﻻ ﻣﻌﺒﻮﺩ ﺣﻖ ﺇﻻ ﺍﻟﻠﻪ ، ﻭﺃﻥ ﻣﺎ ﻋﺒﺪﻩ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﻣﻦ ﺩﻭﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﻛﻠﻪ ﺑﺎﻃﻞ.‘‘ ‘‘শাহাদাহর অর্থ হচ্ছে, মুখে ও অন্তরে সাক্ষ্য দেওয়া। আর তা এই মর্মে যে, ‘‘লা মা‘বূদা হাক্বক্বুন ইল্লাল্লাহ্’’ তথা ‘আল্লাহ্ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই’। সে (বান্দা) তার মুখ দিয়ে সাক্ষ্য দিবে এবং অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করবে যে, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’। অর্থাৎ, ‘‘লা মা‘বূদা হাক্বক্বুন ইল্লাল্লাহ্’’ তথা ‘আল্লাহ্ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই’।
এই বাক্যটি মূলত ‘লা ইলাহা হাক্বক্বুন ইল্লাল্লাহ্’ তথা ‘আল্লাহ্ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই’। আর ‘হাক্বক্বুন’ শব্দটিকে উহ্য খবর (বিধেয়) মানলে নিম্নোক্ত জটিলতার জবাব স্পষ্টরূপে প্রতিভাত হয়। আর তা হল:
আর আল্লাহ্কে বাদ দিয়ে মানুষ যা কিছুর উপাসনা (‘ইবাদত) করে, তথা প্রতিমা, মৃত ব্যক্তি, গাছ, পাথর, ফিরিশতা প্রভৃতির; এই সকল (উপাস্যই) বাত্বিল। যেমন আল্লাহ্ বলেছেন, ‘‘আর এটা এজন্য যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ই সত্য, আর তাঁর পরিবর্তে যাকে ডাকে, অবশ্যই তা বাত্বিল (তথা অসত্য বা মিথ্যা)।’’ [সূরাহ্ হাজ্জঃ ৬২] এটাই ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ ‘র প্রতি সাক্ষ্য দানের অর্থ। তুমি সজ্ঞানে দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে সত্যতার সাথে এই সাক্ষ্য দিবে যে, ‘‘লা মা‘বূদা হাক্বক্বুন ইল্লাল্লাহ্’’ তথা ‘আল্লাহ্ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই’, আর আল্লাহ্ ব্যতীত মানুষ যা কিছুর উপাসনা (‘ইবাদত) করে- তার সবকিছুই বাত্বিল।’’ [ইমাম ইবনু বাঝ (রহিমাহুল্লাহ্), ফাতাওয়া নূরুন ‘আলাদ দার্ব; খণ্ডঃ ১; পৃষ্ঠাঃ ৫০; সংগৃহীতঃ alifta.net] ৩য় বক্তব্যঃ বিগত শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ্, মুহাদ্দিছ ও মুফাসসির আশ শাইখুল ‘আল্লামাহ্ ইমাম মুহাম্মাদ বিন স্বলিহ্ আল ‘উছাইমীন (রহিমাহুল্লাহ্) [মৃতঃ ১৪২১ হিঃ/২০০১ খ্রিঃ] বলেছেন, ‘‘কালিমাহ্ ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ ‘র অর্থ হল ‘‘লা মা‘বুদা বিহাক্বক্বিন ইল্লাল্লাহ্’’ তথা ‘আল্লাহ্ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই’। সুতরাং ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ ‘র সাক্ষ্য প্রদানের অর্থ হল মানুষ তার অন্তর ও জবান দিয়ে জানবে যে, ‘‘লা মা‘বুদা বিহাক্বক্বিন ইল্লাল্লাহ্’’ তথা ‘আল্লাহ্ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই’। এখানে ইলাহ্ মানে মা’লূহ্ (মা‘বূদ বা উপাস্য), আর আত তাআল্লুহ্ মানে হল তা’আব্বুদ (‘ইবাদত করা)। আর ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ বাক্যটি নাফী তথা নেতিবাচক এবং ইছবাত তথা ইতিবাচক- উভয়কে শামিল করে। সুতরাং নাফী হল ‘লা ইলাহা’, আর ইছবাত হল ‘ইল্লাল্লাহ্’। আল্লাহ্ হল মহত্ত্ব প্রকাশকারী শব্দ, যা ‘লা’ এর উহ্য খবর (বিধেয়) থেকে ‘বদল’ হয়েছে।
’’أَفَرَأَيْتُمُ اللَّاتَ وَالْعُزَّىٰ. وَمَنَاةَ الثَّالِثَةَ الْأُخْرَىٰ. أَلَكُمُ الذَّكَرُ وَلَهُ الْأُنْثَىٰ. تِلْكَ إِذًا قِسْمَةٌ ضِيزَىٰ. إِنْ هِيَ إِلَّا أَسْمَاءٌ سَمَّيْتُمُوهَا أَنْتُمْ وَآبَاؤُكُمْ مَا أَنْزَلَ اللَّهُ بِهَا مِنْ سُلْطَانٍ ۚ إِنْ يَتَّبِعُونَ إِلَّا الظَّنَّ وَمَا تَهْوَى الْأَنْفُسُ ۖ وَلَقَدْ جَاءَهُمْ مِنْ رَبِّهِمُ الْهُدَىٰ.‘‘
কিভাবে (একথা) বলা যায় যে, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ তথা ‘আল্লাহ্ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই’ ? অথচ এমন অনেক উপাস্য রয়েছে, আল্লাহ্কে ব্যতিরেকে যাদের উপাসনা (‘ইবাদত) করা হয়। আর স্বয়ং আল্লাহ্ তাদের নামকরণ করেছেন- আলিহাহ্ (উপাস্যসমূহ) এবং সেগুলোর উপাসকরাও তাদের নামকরণ করেছে- আলিহাহ্ (উপাস্যসমূহ)! আল্লাহ্ তা‘আলা বলেছেন, ’’فَمَا أَغْنَتْ عَنْهُمْ آلِهَتُهُمُ الَّتِي يَدْعُونَ مِنْ دُونِ اللَّهِ مِنْ شَيْءٍ لَمَّا جَاءَ أَمْرُ رَبِّكَ.‘‘ ‘‘তোমার প্রতিপালকের হুকুম যখন এসে গেল, তখন আল্লাহ্কে বাদ দিয়ে তারা যেসব ইলাহ্কে (আলিহাহ্) ডাকত, ওগুলো তাদের কোনই কাজে আসল না।’’ [সূরাহ্ হূদঃ ১০১] আর এটা কিভাবে সম্ভব যে, আমরা আল্লাহ্ ব্যতীত অন্যের জন্য উপাসনা সাব্যস্ত করব ? অথচ রাসূলগণ তাঁদের ক্বওমদেরকে বলেছিলেন, ’’اعْبُدُوا اللَّهَ مَا لَكُمْ مِنْ إِلَٰهٍ غَيْرُهُ.‘‘ ‘‘তোমরা আল্লাহর ‘ইবাদাত কর, তিনি ছাড়া তোমাদের কোন ইলাহ্ (উপাস্য) নাই।’’ [সূরাহ্ আ‘রাফঃ ৫৯, ৬৫, ৭৩, ৮৫] আর এই জটিলতার জবাব ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ ‘র মধ্যে একটি উহ্য খবর (বিধেয়) মানার মাধ্যমেই স্পষ্ট হয়। সুতরাং আমরা বলব, আল্লাহ্ ব্যতীত যে উপাস্যগুলোর উপাসনা করা হয়, তারা উপাস্য ঠিকই, তবে (নিঃসন্দেহে) বাত্বিল (ভ্রান্ত) উপাস্য। কখনোই সেগুলো সত্য উপাস্য নয়। আর এদের উপাসনা পাওয়ারও কোন যোগ্যতা নেই। মহান আল্লাহর নিম্নোক্ত বাণীটি তা প্রমাণ করে, ’’ذَٰلِكَ بِأَنَّ اللَّهَ هُوَ الْحَقُّ وَأَنَّ مَا يَدْعُونَ مِنْ دُونِهِ هُوَ الْبَاطِلُ وَأَنَّ اللَّهَ هُوَ الْعَلِيُّ الْكَبِيرُ.‘‘ ‘‘আর এটা এজন্য যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ই সত্য, আর তাঁর পরিবর্তে যাকে ডাকে, অবশ্যই তা বাত্বিল (তথা অসত্য বা মিথ্যা)। আর আল্লাহ্, তিনি তো সর্বোচ্চ, সুমহান।’’ [সূরাহ্ হাজ্জঃ ৬২]
মহান আল্লাহর এই বাণীও তা প্রমাণ করে,
‘‘তোমরা কি লাত ও ‘উঝঝা সম্পর্কে ভেবে দেখেছ ? আর তৃতীয় আরেকটি মানাৎ সম্পর্কে ? (এ সব অক্ষম, বাকশক্তিহীন, নড়া-চড়ার শক্তিহীন মূর্তিগুলোর পূজা করা কতটা যুক্তিযুক্ত)।
‘‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে অন্য উপাস্যকেও ডাকে, এ ব্যাপারে তার কাছে কোন প্রমাণ নেই।’’ [সূরাহ্ মু’মিনূনঃ ১১৭]
কী! তোমাদের জন্য পুত্র সন্তান, আর আল্লাহর জন্য কন্যা সন্তান ? তাহলে এটাতো খুবই অসঙ্গত ভাগ-বাঁটোয়ারা। এগুলো তো কেবল কতকগুলো নাম, যে নাম তোমরা আর তোমাদের পূর্বসূরিরা রেখেছ, এর পক্ষে আল্লাহ্ কোন প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি। তারা তো শুধু অনুমান আর প্রবৃত্তিরই অনুসরণ করে, যদিও তাদের কাছে তাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে পথনির্দেশ এসেছে।’’ [সূরাহ্ নাজমঃ ১৯-২৩] আর ইউসুফ (‘আলাইহিস সালাম) সম্পর্কে মহান আল্লাহর এই বাণীটিও তা প্রমাণ করে, ’’مَا تَعْبُدُونَ مِنْ دُونِهِ إِلَّا أَسْمَاءً سَمَّيْتُمُوهَا أَنْتُمْ وَآبَاؤُكُمْ مَا أَنْزَلَ اللَّهُ بِهَا مِنْ سُلْطَانٍ.‘‘ ‘‘তাঁকে (আল্লাহ্কে) বাদ দিয়ে তোমরা যার ‘ইবাদাত করছ তা কতকগুলো নাম ছাড়া আর কিছুই নয়, যে নামগুলো তোমরা আর তোমাদের পূর্বসূরিরা রেখেছ। এ ব্যাপারে আল্লাহ্ কোন প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি।’’ [সূরাহ্ ইউসুফঃ ৪০] এক্ষণে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ ‘র অর্থ দাঁড়াল, ‘‘লা মা‘বুদা হাক্বক্বুন ইল্লাল্লাহ্’’ তথা ‘আল্লাহ্ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই’। পক্ষান্তরে তিনি ব্যতীত যে উপাস্যগুলো রয়েছে, যাদের উপাসকরা তাদের উপাসনা সম্পর্কে ধারণা করে যে,(তারা সত্য); সেগুলো কখনোই প্রকৃত বা সত্য উপাস্য নয়, বরং ওগুলো ভ্রান্ত উপাস্য।’’ [ইমাম ইবনু ‘উছাইমীন (রহিমাহুল্লাহ্), শারহু ছালাছাতিল উস্বূল; পৃষ্ঠাঃ ৭১-৭২; দারুছ ছুরাইয়্যা, রিয়াদ্ব (রিয়াদ) ছাপা; সনঃ ১৪২০ হিঃ/২০০০ খ্রিঃ (১ম প্রকাশ)] ৪র্থ বক্তব্যঃ ইমাম মুহাম্মাদ বিন স্বলিহ্ আল ‘উছাইমীন (রহিমাহুল্লাহ্) [মৃতঃ ১৪২১ হিঃ/২০০১ খ্রিঃ]
আরো বলেছেন, ‘‘যখন কেউ বলবে যে, কিভাবে তোমরা এই কালিমাহর স্বীকৃতি দিচ্ছ (যেখানে বলা হয়েছে আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই), অথচ স্বয়ং আল্লাহ্ স্বীকৃতি দিচ্ছেন, তিনি ছাড়া আরো উপাস্য আছে ? যেমন তিনি বলেছেন, ’’وَلَا تَدْعُ مَعَ اللَّهِ إِلَٰهًا آخَرَ.‘‘ ‘‘তুমি আল্লাহর সঙ্গে অন্য কোন উপাস্যকে ডেকো না।’’ [সূরাহ্ ক্বস্বাস্বঃ ৮৮] তিনি আরো বলেছেন, ’’وَمَنْ يَدْعُ مَعَ اللَّهِ إِلَٰهًا آخَرَ لَا بُرْهَانَ لَهُ بِهِ.‘‘ তিনি আরো বলেছেন, ’’فَمَا أَغْنَتْ عَنْهُمْ آلِهَتُهُمُ الَّتِي يَدْعُونَ مِنْ دُونِ اللَّهِ مِنْ شَيْءٍ.‘‘ ‘‘আল্লাহ্কে বাদ দিয়ে তারা যেসব ইলাহ্কে ডাকত, ওগুলো তাদের কোনই কাজে আসেনি।’’ [সূরাহ্ হূদঃ ১০১] আর ইবরাহীম (‘আলাইহিস সালাম) এর কথা, ’’أَئِفْكًا آلِهَةً دُونَ اللَّهِ تُرِيدُونَ.‘‘
"ﻻ ﺇﻟﻪ" ﻧﺎﻓﻴﺎ ﺟﻤﻴﻊ ﻣﺎ ﻳﻌﺒﺪ ﻣﻦ ﺩﻭﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﻓﻼ ﻳﺴﺘﺤﻖ ﺃﻥ ﻳﻌﺒﺪ. "ﺇﻻ ﺍﻟﻠﻪ" ﻣﺜﺒﺘﺎ ﺍﻟﻌﺒﺎﺩﺓ ﻟﻠﻪ ﻓﻬﻮ ﺍﻹﻟﻪ ﺍﻟﺤﻖ ﺍﻟﻤﺴﺘﺤﻖ ﻟﻠﻌﺒﺎﺩﺓ ﻓﺘﻘﺪﻳﺮ ﺧﺒﺮ ﻻ ﺍﻟﻤﺤﺬﻭﻑ ﺑﺤﻖ ﻫﻮ ﺍﻟﺬﻱ ﺟﺎﺀﺕ ﺑﻪ ﻧﺼﻮﺹ ﺍﻟﻜﺘﺎﺏ ﻭﺍﻟﺴﻨﺔ ﻛﻤﺎ ﺳﻨﻮﺭﺩﻫﺎ ﺇﻥ ﺷﺎﺀ ﺍﻟﻠﻪ. ﻭﺃﻣﺎ ﺗﻘﺪﻳﺮﻩ ﺑﻤﻮﺟﻮﺩ ﻓﻴﻔﻬﻢ ﻣﻨﻪ ﺍﻻﺗﺤﺎﺩ ، ﻓﺈﻥ ﺍﻹﻟﻪ ﻫﻮ ﺍﻟﻤﻌﺒﻮﺩ ﻓﺈﺫﺍ ﻗﻴﻞ ﻻ ﻣﻌﺒﻮﺩ ﻣﻮﺟﻮﺩ ﺇﻻ ﺍﻟﻠﻪ ﻟﺰﻡ ﻣﻨﻪ ﺃﻥ ﻛﻞ ﻣﻌﺒﻮﺩ ﻋﺒﺪ ﺑﺤﻖ ﺃﻭ ﺑﺎﻃﻞ ﻫﻮ ﺍﻟﻠﻪ. ﻓﻴﻜﻮﻥ ﻣﺎ ﻋﺒﺪﻩ ﺍﻟﻤﺸﺮﻛﻮﻥ ﻣﻦ ﺍﻟﺸﻤﺲ ﻭﺍﻟﻘﻤﺮ ﻭﺍﻟﻨﺠﻮﻡ ﻭﺍﻷﺷﺠﺎﺭ ﻭﺍﻷﺣﺠﺎﺭ ﻭﺍﻟﻤﻼﺋﻜﺔ ﻭﺍﻷﻧﺒﻴﺎﺀ ﻭﺍﻷﻭﻟﻴﺎﺀ ﻭﻏﻴﺮ ﺫﻟﻚ ﻫﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻓﻴﻜﻮﻥ ﺫﻟﻚ ﻛﻠﻪ ﺗﻮﺣﻴﺪﺍ ، ﻓﻤﺎ ﻋﺒﺪ ﻋﻠﻰ ﻫﺬﺍ ﺍﻟﺘﻘﺪﻳﺮ ﺇﻻ ﺍﻟﻠﻪ ﺇﺫ ﻫﻲ ﻫﻮ ، ﻭﻫﺬﺍ ﻭﺍﻟﻌﻴﺎﺫ ﺑﺎﻟﻠﻪ ﺃﻋﻈﻢ ﺍﻟﻜﻔﺮ ﻭﺃﻗﺒﺤﻪ ﻋﻠﻰ ﺍﻹﻃﻼﻕ. ﻭﻓﻴﻪ ﺇﺑﻄﺎﻝ ﻟﺮﺳﺎﻻﺕ ﺟﻤﻴﻊ ﺍﻟﺮﺳﻞ ﻭﻛﻔﺮ ﺑﺠﻤﻴﻊ ﺍﻟﻜﺘﺐ ﻭ ﺟﺤﻮﺩ ﻟﺠﻤﻴﻊ ﺍﻟﺸﺮﺍﺋﻊ ﻭ ﺗﻜﺬﻳﺐ ﺑﻜﻞ ﺫﻟﻚ ﻭ ﺗﺰﻛﻴﺔ ﻟﻜﻞ ﻛﺎﻓﺮ ﻣﻦ ﺃﻥ ﻳﻜﻮﻥ ﻛﺎﻓﺮﺍ ، ﺇﺫ ﻛﻞ ﻣﺎ ﻋﺒﺪﻩ ﻣﻦ ﺍﻟﻤﺨﻠﻮﻗﺎﺕ ﻫﻮ ﺍﻟﻠﻪ. ﻓﻠﻢ ﻳﻜﻦ ﻋﻨﺪﻫﻢ ﻣﺸﺮﻛﺎ ﺑﻞ ﻣﻮﺣﺪﺍ ، ﺗﻌﺎﻟﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻤﺎ ﻳﻘﻮﻝ ﺍﻟﻈﺎﻟﻤﻮﻥ ﻭﺍﻟﺠﺎﺣﺪﻭﻥ ﻋﻠﻮﺍ ﻛﺒﻴﺮﺍ ، ﻓﺈﺫﺍ ﻓﻬﻤﻨﺎ ﻫﺬﺍ ﻓﻼ ﻳﺠﻮﺯ ﺗﻘﺪﻳﺮ ﺍﻟﺨﺒﺮ ﻣﻮﺟﻮﺩ ﺇﻻ ﺃﻥ ﻳﻨﻌﺖ ﺍﺳﻢ ﻻ ﺑﺤﻖ ﻓﻼ ﺑﺄﺱ ﻭ ﻳﻜﻮﻥ ﺍﻟﺘﻘﺪﻳﺮ ﻻ ﺇﻟﻪ ﺣﻘﺎ ﻣﻮﺟﻮﺩ ﺇﻻ ﺍﻟﻠﻪ ، ﻓﺒﻘﻴﺪ ﺍﻻﺳﺘﺤﻘﺎﻕ ﻳﻨﺘﻔﻲ ﺍﻟﻤﺤﺬﻭﺭ ﺍﻟﺬﻱ ﺫﻛﺮﻧﺎ ."
‘‘তোমরা কি আল্লাহ্কে বাদ দিয়ে মিথ্যা উপাস্য কামনা করো ?’’ [সূরাহ্ স্বফফাতঃ ৮৬] এছাড়াও এ মর্মে আরো আয়াত রয়েছে।
সুতরাং, তুমি কিভাবে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ ‘র সাক্ষ্যদানের সাথে এগুলোর সমন্বয় করবে ?
উত্তরঃ নিশ্চিতরূপেই আল্লাহ্ ব্যতীত সকল কিছুর উপাসনা (‘ইবাদত) বাত্বিল। এগুলো শুধু (তাদের) নাম মাত্র। মহান আল্লাহ বলেছেন, ’’إِنْ هِيَ إِلَّا أَسْمَاءٌ سَمَّيْتُمُوهَا أَنْتُمْ وَآبَاؤُكُمْ مَا أَنْزَلَ اللَّهُ بِهَا مِنْ سُلْطَانٍ.‘‘ ‘‘এগুলো তো কেবল কতকগুলো নাম, যে নাম তোমরা আর তোমাদের পূর্বসূরিরা রেখেছ, এর পক্ষে আল্লাহ্ কোন প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি।’’ [সূরাহ্ নাজমঃ ২৩]
সুতরাং এগুলোর উপাসনা বাত্বিল বলে বিবেচিত। যদিও তাদের উপাসনা করা হয়, আর মূলত পথভ্রষ্টরাই তাদের উপাসনা করে থাকে। তবুও তারা নিশ্চিতরূপেই উপাসনা পাওয়ার যোগ্য নয়। এগুলো উপাসনাপ্রাপ্ত উপাস্য বটে, কিন্তু এগুলো বাত্বিল (ভ্রান্ত) উপাস্য। মহান আল্লাহ বলেছেন, ’’ذَٰلِكَ بِأَنَّ اللَّهَ هُوَ الْحَقُّ وَأَنَّ مَا يَدْعُونَ مِنْ دُونِهِ الْبَاطِلُ.‘‘ ‘‘এসব প্রমাণ করে যে, আল্লাহ্ই সত্য এবং তাঁর পরিবর্তে তারা যাকে ডাকে তা মিথ্যা।’’ [সূরাহ্ লুক্বমানঃ ৩০]’’ [ইমাম ইবনু ‘উছাইমীন (রহিমাহুল্লাহ্), শারহুল ‘আক্বীদাতিল ওয়াসিত্বিয়্যাহ্, খণ্ডঃ ১; পৃষ্ঠাঃ ২৭; দারু ইবনিল জাওঝী, দাম্মাম ছাপা; সনঃ ১৪২১ হিজরী (৬ষ্ঠ প্রকাশ)] ৫ম বক্তব্যঃ ইমাম ইবনু ‘উছাইমীন (রহিমাহুল্লাহ্) [মৃতঃ ১৪২১ হিঃ/২০০১ খ্রিঃ] আরো বলেছেন, ’’((لا إله إلا الله)) أي : لا معبود على وجه يستحق أن يُعبد إلا الله، وهذه الاصنام التي تُعبد لا تستحق العبادة؛ لأنه ليس فيها من خصائص الالوهية شيء.‘‘ ‘‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্; অর্থাৎ, আল্লাহ্ ছাড়া ‘ইবাদত পাওয়ার যোগ্য কোন উপাস্য নেই। আর যে মূর্তিসমূহের উপাসনা করা হয়, তারা উপাসনা পাওয়ার যোগ্য নয়। কেননা তাদের মধ্যে উপাস্য হওয়ার কোন বৈশিষ্ট্যই নেই।’’ [ইমাম ইবনু ‘উছাইমীন (রহিমাহুল্লাহ্), আল ক্বওলুল মুফীদ ‘আলা কিতাবিত তাওহীদ; খণ্ডঃ ১; পৃষ্ঠাঃ ৬২-৬৩; দারুল ‘আস্বিমাহ্ ছাপা (সন তারিখ বিহীন)]
৬ষ্ঠ বক্তব্যঃ আশ শাইখুল ‘আল্লামাহ্ হাফিয ইবনু আহমাদ আল হাকামী (রহিমাহুল্লাহ্) [মৃতঃ ১৩৭৭ হিঃ/১৯৫৮ খ্রিঃ] বলেছেন, "ﻓﻤﻌﻨﻰ ﻻ ﺇﻟﻪ ﺇﻻ ﺍﻟﻠﻪ ﻻ ﻣﻌﺒﻮﺩ ﺑﺤﻖ ﺇﻻ ﺍﻟﻠﻪ
[শাইখ হাফিয আল হাকামী (রাহিমাহুল্লাহ্), মা’আরিজুল ক্বুবূল বি শারহি সুল্লামিল উস্বূল ইলা ‘ইলমিল উস্বূল (ফিত তাওহীদ); খণ্ডঃ ২; পৃষ্ঠাঃ ৪১৬; দারু ইবনিল ক্বাইয়্যিম, দাম্মাম ছাপা; ১৪১৫ হিঃ/১৯৯৫ খ্রিঃ (৩য় প্রকাশ)]
“কালিমাহ্ ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ ‘র অর্থ হল ‘‘লা মা‘বূদা বিহাক্বক্বিন ইল্লাল্লাহ্’’ তথা ‘আল্লাহ্ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই’। ‘লা ইলাহা’ আল্লাহ্ ব্যতীত সমস্ত উপাস্যকে অস্বীকার করে; সুতরাং আল্লাহ্ ছাড়া আর কোন কিছুই ‘ইবাদতের হক্বদার নয়। আর ‘ইল্লাল্লাহ্’ যাবতীয় ‘ইবাদতকে কেবল আল্লাহর জন্য সাব্যস্ত করে; তিনিই সত্যিকারের ইলাহ্ (উপাস্য), যিনি যাবতীয় ‘ইবাদতের হক্বদার। ‘লা’ এর খবর (বিধেয়) ‘বিহাক্বক্বিন’ উহ্য আছে। এ ব্যাপারে ক্বুরআন ও সুন্নাহ্য় দলিল বর্ণিত হয়েছে, অচিরেই আমরা সেগুলো উল্লেখ করব, ইনশাআল্লাহ্। পক্ষান্তরে ‘বিমাউজূদিন’ কে খবর (বিধেয়) হিসেবে গণ্য করা হলে এর দ্বারা সর্বেশ্বরবাদের বিশ্বাস উদ্দিষ্ট হয়। নিশ্চয়ই ইলাহ্ হল মা’বূদ (উপাস্য)। সুতরাং যখন বলা হবে- ‘‘লা মা’বূদা মাউজূদুন ইল্লাল্লাহ্’’ তথা ‘আল্লাহ্ ছাড়া কোন উপাস্য নেই’, তখন এ বিষয়টি আবশ্যকভাবে আসে যে, ‘প্রত্যেক উপাস্যই আল্লাহ্, চাই তার ‘ইবাদত (উপাসনা) হক্বভাবে করা হোক বা বাত্বিলভাবে করা হোক। অতএব মুশরিকরা সূর্য, চন্দ্র, নক্ষত্র, গাছ, পাথর, মালাইকাহ্ (ফিরিশতাগণ), নাবী, ওয়ালী সহ আরো যা কিছুর ‘ইবাদত করে, সবকিছুই আল্লাহ্ বনে যাবে! এগুলোর ‘ইবাদত (উপাসনা) করাও তাওহীদ হিসেবে গণ্য হবে। ‘বিমাউজূদিন’ কে উহ্য খবর (বিধেয়) ধরলে আল্লাহ্ ছাড়া যা কিছুর ‘ইবাদত করা হয়, তার সবকেই আল্লাহ্ গণ্য করা হয়। সার্বিকভাবে এটা সবচেয়ে বড় ও নিকৃষ্ট কুফুরী। আল ‘ইয়াযু বিল্লাহ্ (আমরা আল্লাহর কাছে এ থেকে পানাহ চাই।)। এর মাধ্যমে সকল রসূলের রিসালাতকে নাকচ করা হয়, সকল আসমানী গ্রন্থকে অস্বীকার করা হয়, সকল শরী‘আহ্কে অবিশ্বাস করা হয়, আর পূর্বোক্ত সবগুলোকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা হয় এবং কাফিরের কাফির হওয়াকে তাযকিয়াহ্ (প্রশংসূচক সনদ/ভাল স্বীকৃতি) দেওয়া হয়। কারণ, সৃষ্টিকুলের যেই যা কিছুর ‘ইবাদত করুক না কেন, সে আল্লাহ্! তাদের নিকটে কোন মুশরিক থাকে না, শুধু মুওয়াহ্হিদ (একনিষ্ঠ তাওহীদবাদী) থাকে। অবিশ্বাসী জালিমরা যা বলে, তা থেকে আল্লাহ্ তা’আলা অনেক ঊর্ধে রয়েছেন। যখন আমরা এই বিষয়টি জানব, তখন ‘মাউজূদুন’ কে খবর (বিধেয়) গণ্য করা জায়িঝ (বৈধ) হবে না। তবে ‘লা’ এর ইসম (উদ্দেশ্য) এর বিশেষণ (অ্যাডজেক্টিভ) হিসেবে ‘হাক্বক্বুন’ আনলে, ‘মাউজূদুন’ কে খবর (বিধেয়) গণ্য করায় কোন সমস্যা নেই। তখন কালিমাহ্টি এমন হবে- ‘লা ইলাহা হাক্বক্বান মাউজূদুন ইল্লাল্লাহ্’ তথা ‘আল্লাহ্ ছাড়া কোন হক্ব উপাস্যের অস্তিত্ব নেই’। ‘হাক্বক্বুন’ শব্দটির দ্বারা শর্তযুক্ত করার মাধ্যমে আমাদের উল্লিখিত ভয়ঙ্কর বিষয়টি বিতাড়িত হয়।” ৭ম বক্তব্যঃ আশ শাইখুল ‘আল্লামাহ্ আহমাদ বিন ইয়াহ্ইয়া আন নাজমী (রহিমাহুল্লাহ্) [মৃতঃ ১৪২৯ হিঃ/২০০৮ খ্রিঃ] বলেছেন, ”معناها: لا معبود بحق إلا الله.“ ‘‘কালিমাহ্ ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ ‘র অর্থ হল- ‘‘লা মা‘বূদা বিহাক্বক্বিন ইল্লাল্লাহ্’’ তথা ‘আল্লাহ্ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই’।’’
‘‘কালিমাহ্ ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ ‘র অর্থ হল- ‘লা মা‘বুদা বিহাক্বক্বিন ইল্লাল্লাহ্’।অর্থাৎ, আল্লাহ্ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই।’’
[আল্লামাহ্ আহমাদ আন নাজমী (রহিমাহুল্লাহ্), ফাতহুর রব্বিল গফূরি যির রহমাহ্ ফী শারহিল ওয়াজিবাতিল মুতাহাত্তিমাতিল মা‘রিফাতা ‘আলা কুল্লি মুসলিমিউ ওয়া মুসলিমাহ্; পৃষ্ঠাঃ ৪৫; দারুল মিনহাজ, কায়রো ছাপা; সনঃ ১৪৩৪ হিঃ/২০১৩ খ্রিঃ (১ম প্রকাশ)] ৮ম বক্তব্যঃ
শাইখ মুহাম্মাদ বিন জামীল ঝাইনূ (রহিমাহুল্লাহ্) [মৃতঃ ১৪৩১ হিঃ/২০১০ খ্রিঃ] বলেছেন, ”قال الله تعالى: فَاعْلَمْ أَنَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا اللَّهُ، أي لا معبود في السموات والأرض بحق إلا الله.“ ‘‘মহান আল্লাহ্ বলেছেন, ‘সুতরাং তুমি জেনে রাখ যে, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’। (সূরাহ্ মুহাম্মাদঃ ১৯) অর্থাৎ এটা জানো যে, আসমান ও জমিনে আল্লাহ্ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই।’’ [শাইখ মুহাম্মাদ বিন জামীল ঝাইনূ (রহিমাহুল্লাহ্), মাজমূ‘আতু রসাইলিত তাওজীহাতিল ইসলামিয়্যাহ্ লি ইস্বলাহিল ফারদি ওয়াল মুজতামা‘; খণ্ডঃ ১; পৃষ্ঠাঃ ২৪৯; দারুস্ব স্বমী‘ঈ, রিয়াদ্ব ছাপা; সনঃ ১৪১৭ হিঃ/১৯৯৭ খ্রিঃ (৯ম প্রকাশ)]
৯ম বক্তব্যঃ
আশ শাইখুল ‘আল্লামাহ্ মুহাম্মাদ বিন ‘আব্দুল ওয়াহ্হাব আল ওয়াস্বস্বাবী আল ‘আবদালী (রহিমাহুল্লাহ্) [মৃতঃ ১৪৩৬ হিঃ/২০১৫ খ্রিঃ] বলেছেন, ’’معنى لا إله إلا الله، أي: لا معبود بحق إلا الله، وغير الله إن عبد بالباطل.‘‘ ‘‘কালিমাহ্ ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ ‘র অর্থ হল- ‘‘লা মা‘বূদা বিহাক্বক্বিন ইল্লাল্লাহ্’’ তথা ‘আল্লাহ্ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই’। আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য যারই উপাসনা করা হয় তা বাত্বিল।’’ [শাইখ মুহাম্মাদ বিন ‘আব্দুল ওয়াহ্হাব আল ওয়াস্বস্বাবী, আল ক্বওলুল মুফীদ ফী আদিল্লাতিত তাওহীদ; পৃষ্ঠাঃ ২৫; মাকতাবাতুল ইমামিল ওয়াদি‘ঈ, স্বন‘আ (সানা) ছাপা; সনঃ ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দ (১০ম প্রকাশ)] ১০ম বক্তব্যঃ
শাইখ ইবরাহীম বিন শাইখ স্বলিহ্ বিন আহমাদ আল খুরাইস্বী (রহিমাহুল্লাহ্) [মৃতঃ ১৪১৫ হিঃ] বলেছেন, ”فمعنى ((لا إله إلا الله)) لا معبود بحق إلا الله، لا مألوه يستحق العبادة كلها وحده دون من سواه إلا الله سبحانه، كل مألوه سوى الله عز وجل، فألهيته أبطل الباطل وأضل الضلال.“ ‘‘কালিমাহ্ ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ ‘র অর্থ হল ‘‘লা মা‘বূদা বিহাক্বক্বিন ইল্লাল্লাহ্’’ তথা ‘আল্লাহ্ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই’। আল্লাহ্ ছাড়া কোন উপাস্যই ‘ইবাদতের হক্বদার নয়। আল্লাহ্ ব্যতীত যত উপাস্য রয়েছে, তাদের প্রত্যেকের ‘ইবাদতই সবচেয়ে বড় বাত্বিল এবং সবচেয়ে বড় পথভ্রষ্টতা।’’ [শাইখ ইবরাহীম বিন শাইখ স্বলিহ্ আল খুরাইস্বী (রহিমাহুল্লাহ্), আত তাম্বীহাতুল মুখতাস্বারাহ্ শারহুল ওয়াজিবাতিল মুতাহাত্তিমাতিল মা‘রিফাতা ‘আলা কুল্লি মুসলিমিউ ওয়া মুসলিমাহ্; পৃষ্ঠাঃ ৩৫; দারুস্ব স্বমী‘ঈ, রিয়াদ্ব (রিয়াদ) ছাপা; সনঃ ১৪১৪ হিঃ/১৯৯৪ খ্রিঃ (১ম প্রকাশ); এটা এমন একটি গ্রন্থ, যার প্রশংসা করেছেন ‘আল্লামাহ্ ‘আব্দুল্লাহ্ আল ক্বর‘আউয়ী (রহিমাহুল্লাহ্) [মৃতঃ ১৩৮৯ হিঃ]।] ১১শ বক্তব্যঃ শাইখ ‘আব্দুল্লাহ্ বিন জারুল্লাহ বিন ইবরাহীম জারুল্লাহ্ (রহিমাহুল্লাহ্) [মৃতঃ ১৪১৪ হিঃ] বলেছেন, ’’ومعنى لا إله إلا الله: لا معبود بحق إلا الله.‘‘
(ক) ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ ‘র অর্থ হলঃ আল্লাহ্ ছাড়া কোন উপাস্য নেই। এটা বাত্বিল অর্থ। কারণ এর অর্থ দাঁড়ায় সত্য বা মিথ্যা যারই ‘ইবাদত (উপাসনা) করা হয় সেই হল আল্লাহ..! যেমনটি পূর্বে উল্লিখিত হয়েছে।
[শাইখ ‘আব্দুল্লাহ্ বিন জারুল্লাহ্ (রহিমাহুল্লাহ্), আল জামি‘উল ফারীদ লিল আসইলাতি ওয়াল আজউয়িবাতি ‘আলা কিতাবিত তাওহীদ; পৃষ্ঠাঃ ১৫; মুআসসাসাতু ক্বুরত্বুবাহ্, কায়রো ছাপা; সনঃ ১৪০৮ হিঃ/১৯৮৮ খ্রিঃ (১ম প্রকাশ)] ১২শ বক্তব্যঃ
সৌদি ফাতাওয়া বোর্ড এবং সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদের সম্মানিত সদস্য আমাদের পিতা ফাক্বীহুঝ ঝামান আশ শাইখুল ‘আল্লামাহ্ ইমাম স্বলিহ্ বিন ফাওঝান আল ফাওঝান (হাফিয্বাহুল্লাহ্) [জন্মঃ ১৩৫৪ হিঃ/১৯৩৫ খ্রিঃ] বলেছেন, ﻣﻌﻨﻰ ﺷﻬﺎﺩﺓ ﺃﻥ ﻻ ﺇﻟﻪ ﺇﻻ ﺍﻟﻠﻪ : ﺍﻻﻋﺘﻘﺎﺩ ﻭﺍﻻﻗﺮﺍﺭ ، ﺃﻧﻪ ﻻ ﻳﺴﺘﺤﻖ ﺍﻟﻌﺒﺎﺩﺓ ﺇﻻ ﺍﻟﻠﻪ ، ﻭﺍﻟﺘﺰﺍﻡ ﺫﻟﻚ ﻭﺍﻟﻌﻤﻞ ﺑﻪ ، ‏( ﻓﻼ ﺇﻟﻪ ‏) ﻧﻔﻲ ﻻﺳﺘﺤﻘﺎﻕ ﻣﻦ ﺳﻮﻯ ﺍﻟﻠﻪ ﻟﻠﻌﺒﺎﺩﺓ ﻛﺎﺋﻨﺎً ﻣﻦ ﻛﺎﻥ ‏( ﺇﻻ ﺍﻟﻠﻪ ‏) ﺇﺛﺒﺎﺕ ﻻﺳﺘﺤﻘﺎﻕ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺣﺪﻩ ﻟﻠﻌﺒﺎﺩﺓ ، ﻭﻣﻌﻨﻰ ﻫﺬﻩ ﺍﻟﻜﻠﻤﺔ ﺇﺟﻤﺎﻻ : ﻻ ﻣﻌﺒﻮﺩ ﺑﺤﻖ ﺇﻻ ﺍﻟﻠﻪ . ﻭﺧﺒﺮ ‏( ﻻ ‏) ﻳﺠﺐ ﺗﻘﺪﻳﺮﻩ : ‏( ﺑﺤﻖ ‏) ﻭﻻ ﻳﺠﻮﺯ ﺗﻘﺪﻳﺮﻩ ﺑﻤﻮﺟﻮﺩ؛ ﻷﻥ ﻫﺬﺍ ﺧﻼﻑ ﺍﻟﻮﺍﻗﻊ ، ﻓﺎﻟﻤﻌﺒﻮﺩﺍﺕ ﻏﻴﺮ ﺍﻟﻠﻪ ﻣﻮﺟﻮﺩﺓ ﺑﻜﺜﺮﺓ؛ ﻓﻴﻠﺰﻡ ﻣﻨﻪ ﺃﻥ ﻋﺒﺎﺩﺓ ﻫﺬﻩ ﺍﻷﺷﻴﺎﺀ ﻋﺒﺎﺩﺓ ﻟﻠﻪ ، ﻭﻫﺬﺍ ﻣﻦ ﺃﺑﻄﻞ ﺍﻟﺒﺎﻃﻞ ﻭﻫﻮ ﻣﺬﻫﺐ ﺃﻫﻞ ﻭﺣﺪﺓ ﺍﻟﻮﺟﻮﺩ ﺍﻟﺬﻳﻦ ﻫﻢ ﺃﻛﻔﺮ ﺃﻫﻞ ﺍﻷﺭﺽ . ﻭﻗﺪ ﻓُﺴﺮﺕ ﻫﺬﻩ ﺍﻟﻜﻠﻤﺔ ﺑﺘﻔﺴﻴﺮﺍﺕ ﺑﺎﻃﻠﺔ ﻣﻨﻬﺎ : ‏( ﺃ ‏) ﺃﻥ ﻣﻌﻨﺎﻩ : ﻻ ﻣﻌﺒﻮﺩ ﺇﻻ ﺍﻟﻠﻪ . ﻭﻫﺬﺍ ﺑﺎﻃﻞ؛ ﻷﻥ ﻣﻌﻨﺎﻩ : ﺃﻥ ﻛﻞ ﻣﻌﺒﻮﺩ ﺑﺤﻖ ﺃﻭ ﺑﺎﻃﻞ ﻫﻮ ﺍﻟﻠﻪ ، ﻛﻤﺎ ﺳﺒﻖ ﺑﻴﺎﻧﻪ ﻗﺮﻳﺒﺎً . ‏( ﺏ ‏) ﺃﻥ ﻣﻌﻨﺎﻫﺎ : ﻻ ﺧﺎﻟﻖ ﺇﻻ ﺍﻟﻠﻪ . ﻭﻫﺬﺍ ﺟﺰﺀ ﻣﻦ ﻣﻌﻨﻰ ﻫﺬﻩ ﺍﻟﻜﻠﻤﺔ؛ ﻭﻟﻜﻦ ﻟﻴﺲ ﻫﻮ ﺍﻟﻤﻘﺼﻮﺩ؛ ﻷﻧﻪ ﻻ ﻳﺜﺒﺖ ﺇﻻ ﺗﻮﺣﻴﺪ ﺍﻟﺮﺑﻮﺑﻴﺔ ، ﻭﻫﻮ ﻻ ﻳﻜﻔﻲ ﻭﻫﻮ ﺗﻮﺣﻴﺪ ﺍﻟﻤﺸﺮﻛﻴﻦ . ‏( ﺕ ‏) ﺃﻥ ﻣﻌﻨﺎﻫﺎ : ﻻ ﺣﺎﻛﻤﻴﺔ ﺇﻻ ﺍﻟﻠﻪ ، ﻭﻫﺬﺍ ﺃﻳﻀﺎً ﺟﺰﺀ ﻣﻦ ﻣﻌﻨﻰ ﻫﺬﻩ ﺍﻟﻜﻠﻤﺔ؛ ﻭﻟﻴﺲ ﻫﻮ ﺍﻟﻤﻘﺼﻮﺩ؛ ﻷﻧﻪ ﻟﻮ ﺃﻓﺮﺩ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﺎﻟﺤﺎﻛﻤﻴﺔ ﻓﻘﻂ ﻭﺩﻋﺎ ﻏﻴﺮ ﺍﻟﻠﻪ ﺃﻭ ﺻﺮﻑ ﻟﻪ ﺷﻴﺌﺎً ﻣﻦ ﺍﻟﻌﺒﺎﺩﺓ ﻟﻢ ﻳﻜﻦ ﻣﻮﺣﺪﺍً ، ﻭﻛﻞ ﻫﺬﻩ ﺗﻔﺎﺳﻴﺮ ﺑﺎﻃﻠﺔ ﺃﻭ ﻧﺎﻗﺼﺔ؛ ﻭﺇﻧﻤﺎ ﻧﺒﻬﻨﺎ ﻋﻠﻴﻬﺎ ﻷﻧﻬﺎ ﺗﻮﺟﺪ ﻓﻲ ﺑﻌﺾ ﺍﻟﻜﺘﺐ ﺍﻟﻤﺘﺪﺍﻭﻟﺔ . ﻭﺍﻟﺘﻔﺴﻴﺮ ﺍﻟﺼﺤﻴﺢ ﻟﻬﺬﻩ ﺍﻟﻜﻠﻤﺔ ﻋﻨﺪ ﺍﻟﺴﻠﻒ ﻭﺍﻟﻤﺤﻘﻘﻴﻦ : ﺃﻥ ﻳُﻘﺎﻝ : ‏( ﻻ ﻣﻌﺒﻮﺩ ﺑﺤﻖ ﺇﻻ ﺍﻟﻠﻪ ‏) ﻛﻤﺎ ﺳﺒﻖ. “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহর সাক্ষ্যদানের অর্থ- একথা বিশ্বাস ও স্বীকার করা যে, একমাত্র আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কেউ ‘ইবাদতের হক্বদার নয়। এটা দৃঢ়ভাবে গ্রহণ করা এবং সে অনুযায়ী আমল করা। অতএব, ‘লা ইলাহা’ তে আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য সকলের উপাসনার হক্বদার হওয়াকে অস্বীকার করা হয়েছে। আর ‘ইল্লাল্লাহ্’ তে একমাত্র আল্লাহ্কেই সকল উপাসনার হক্বদার সাব্যস্ত করা হয়েছে। সর্বোপরি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ ‘র সঠিক অর্থ হল- ‘আল্লাহ্ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই’। ‘বিহাক্বক্বিন’ শব্দটিকে উহ্য হিসেবে ‘লা’ এর খবর (বিধেয়) মানা আবশ্যক। ‘মাউজূদুন’ শব্দটিকে ‘লা’ এর খবর (বিধেয়) মানা বৈধ হবে না। কারণ তা বাস্তবতার বিপরীত। পৃথিবীতে আল্লাহ্ ব্যতীত অসংখ্য উপাস্যের অস্তিত্ব পরিলক্ষিত হয়। (যদি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ ‘র অর্থ করি ‘আল্লাহ্ ছাড়া কোন উপাস্য নেই’,) তবে এর অর্থ দাঁড়ায়, তিনি (আল্লাহ্) ব্যতীত যত কিছুর ‘ইবাদত (উপাসনা) করা হচ্ছে তা মূলত তাঁরই ‘ইবাদতের (উপাসনা) শামিল! এটা সবচেয়ে বড় বাত্বিল বিশ্বাস। এটা ওয়াহ্দাতুল উজূদে বিশ্বাসী তথা সর্বেশ্বরবাদীদের ‘আক্বীদাহ্ (বিশ্বাস)। আর সর্বেশ্বরবাদীরাই পৃথিবীর বুকে সবচেয়ে বড় কাফির।
এই কালিমাহর অনেক ভুল ব্যাখ্যা করা হয়। তার মধ্যে নিম্নে কিছু উল্লিখিত হল।
‘‘অনেক বাক্যের অর্থ বুঝা তার ই‘রাব (ব্যাকরণ বিশ্লেষণ) জানার উপর নির্ভর করে। তাই ‘আলিমগণ ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ ‘র ই‘রাব (ব্যাকরণগত বিশ্লেষণের) উপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তারা বলেছেন, ‘লা’ হল লায়ে নাফী জিনস (যা কোন শ্রেণি বা জাতিগত অর্থকে নাফী বা নিষিদ্ধ করে)। আর ইলাহ্ হল তার ইসম (উদ্দেশ্য), যা সর্বদা যবরের উপর অটল থাকে (মাবনী ‘আলাল ফাতাহ্)। আর এর খবর (বিধেয়) উহ্য রয়েছে। সেটা হল ‘হাক্বক্বুন’ তথা ‘সত্য’। আর ‘ইল্লাল্লাহ্’ তার মারফূ’ (পেশ বিশিষ্ট) খবর (বিধেয়) থেকে ইসতিছনা বা পৃথক হয়েছে। আর ইলাহ্ শব্দের অর্থ মা‘বূদ (উপাস্য)। আর তিনি সেই সত্তা, অন্তরসমূহ যার ‘ইবাদত করে এবং কল্যাণ অর্জনার্থে ও অকল্যাণ দূরিভূত করনার্থে (অন্তরসমূহ) আশা নিয়ে তাঁর দিকে ধাবিত হয়। কিন্তু যারা ‘লা’ এর খবর (বিধেয়) ‘মাওজুদ’ বা ‘মা‘বুদ’ নির্ধারণ করেছে, তারা মারাত্মক ভুলে পতিত হয়েছে। কেননা মূর্তি ও মাজার সহ অনেক উপাস্য বিদ্যমান রয়েছে। কিন্তু সত্য উপাস্য হলেন আল্লাহ্।পক্ষান্তরে আল্লাহ্ ব্যতীত সকল উপাস্য ভ্রান্ত এবং তাদের উপাসনা করাও প্রত্যাখ্যানযোগ্য তথা বাত্বিল।’’
(খ) ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ ‘র অর্থ হলঃ আল্লাহ্ ছাড়া কোন স্রষ্টা নেই। এটা কালিমাহর আংশিক অর্থ। কিন্তু এই কালিমাহ্ দিয়ে শুধু এ উদ্দেশ্য করা হয়নি। কারণ, এর মাধ্যমে শুধু তাওহীদুর রুবূবিয়্যাহ্ তথা প্রভূত্বের ক্ষেত্রে একত্ববাদ সাব্যস্ত করা হয়। আর শুধু তাওহীদুর রুবূবিয়্যাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা তাওহীদবাদী হওয়ার জন্য যথেষ্ট নয়। এটা মুশরিকদের তাওহীদ। {রসূল (স্বল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর যুগের মুশরিকরা এ প্রকার তাওহীদকে বিশ্বাস করা সত্ত্বেও তাদেরকে মু’মিন বলে গণ্য করা হয়নি, বরং তারা কাফির হিসেবেই বিবেচিত হয়েছে। (সূরাহ্ মু’মিনূনঃ ৮৬-৮৯) - অনুবাদক।} (গ) ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ ‘র অর্থ হলঃ আল্লাহ্ ছাড়া কোন বিধানদাতা নেই। এটাও উক্ত কালিমাহর আংশিক অর্থ। এটা এ কালিমাহর প্রকৃত উদ্দেশ্য নয়। কারণ, কেউ যদি বিধানদাতা হিসেবে আল্লাহ্কে এক বলে গণ্য করে, সাথে গাইরুল্লাহ্কে (আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য যে কাউকে) আহ্বান করে এবং গাইরুল্লাহর জন্য ‘ইবাদতের কিয়দংশ নির্ধারণ করে। তবে সে তাওহীদবাদী নয়। উপরিউক্ত ব্যাখ্যাগুলো বাত্বিল অথবা অপূর্ণ। প্রচলিত কিছু বইয়ে এসকল ভ্রান্ত ব্যাখ্যা পাওয়া যায় বলে আমরা এ বিষয়ে (লোকদেরকে) সতর্ক করলাম। সালাফে স্বলিহীন এবং মুহাক্বক্বিক্ব (গবেষক) ‘আলিমগণের নিকটে এ কালিমাহর সঠিক ব্যাখ্যা হল- ‘‘লা মা’বূদা বিহাক্বক্বিন ইল্লাল্লাহ্’’ তথা ‘আল্লাহ্ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই’। যেমনটি পূর্বে গত হয়ে গেছে।” [শাইখ স্বলিহ্ আল ফাওঝান (হাফিয্বাহুল্লাহ্), ‘আক্বীদাতুত তাওহীদ; পৃষ্ঠাঃ ৪৫-৪৬; মাকতাবাতু দারিল মিনহাজ, রিয়াদ্ব (রিয়াদ) ছাপা; সনঃ ১৪৩৪ হিজরী (১ম প্রকাশ)] ১৩শ বক্তব্যঃ ইমাম স্বলিহ্ বিন ফাওঝান আল ফাওঝান (হাফিয্বাহুল্লাহ্) [জন্মঃ ১৩৫৪ হিঃ/১৯৩৫ খ্রিঃ] আরো বলেছেন, ’’إذا كان فهم المعنٰى يتوقف على معرفة إعراب الجمل، فإن العلماء -رحمهم الله- قد اهتموا بإعراب لا إله إلا الله، فقالوا: (لا) نافية للجنس، و (إله) اسمها مبني معها علي الفتح، وخبرها محذوف تقديره: (حق) أي: لا إله حق، و(إلا الله) استثناء من الخبر المعروف، والإله معناه: المألوه بالعبادة، وهو الذي تألهه القلوب وتقصده؛ رغرة اليه في حصول نفع أو دفغ ضرر، ويغلط من قدر خبرها بكلمة (موجود أو معبود) فقط؛ لأنه يوجد معبودات كثيرة من الأصنام و الأضرحة و غيرها، ولكن المعبود بحق هو الله، وما سواه فمعبود بالباطل، و عبادتها باطلة.‘‘ [ইমাম স্বলিহ্ আল ফাওঝান, মা‘না লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ ওয়া মুক্বতাদ্বাহা ওয়া আছারুহা ফিল ফারদি ওয়াল মুজতামা‘, পৃষ্ঠাঃ ২৪; আল মীরাছুন নাবাউয়ী, আলজিয়ার্স ছাপা; সনঃ ১৪৩৩ হিঃ/২০১২ খ্রিঃ (২য় প্রকাশ)] কিছুদূর এগিয়ে শাইখ (হাফিয্বাহুল্লাহ্) আরো বলেছেন, ’’اتضح مما سبق أن معنى لا إله إلا الله، لا معبود بحق إلا إله واحد، وهو الله وحده لا شريك له؛ لأنه المستحق للعبادة فتضمنت هذه الكلمة العظيمة أن ما سوى الله من سائر المعبودات ليس بإله حق و أنه باطل؛ لأنه لا يستحق العبادة.‘‘ ‘‘পূর্বোক্ত আলোচনা থেকে স্পষ্ট হয়ে গেল যে, নিশ্চিতরূপেই ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ ‘র অর্থ হল- এক উপাস্য ব্যতীত কোন সত্য উপাস্য নেই। আর তিনি হলেন আল্লাহ্, তিনি এক ও অদ্বিতীয়, তাঁর কোন শরীক নেই। কেননা তিনিই হলেন উপাসনার একমাত্র হক্বদার।সুতরাং এই মহান কালিমাহ্টি এটা অন্তর্ভূক্ত করে যে, আল্লাহ্কে বাদ দিয়ে যত উপাস্য রয়েছে তার কোনটাই সত্য নয়। বরং নিশ্চতরূপেই তা বাত্বিল তথা ভ্রান্ত। কেননা তা উপাসনার হক্বদার নয়।’’ [প্রাগুক্ত; পৃষ্ঠাঃ ২৯] ১৪শ বক্তব্যঃ
ভাষাগতভাবে তাদের সকলের জন্য ‘আলিহাহ্’ তথা ‘উপাস্যসমূহ’ শব্দ প্রয়োগ করা হয়েছে, অর্থাৎ তারা সবাই উপাস্য। আরবরাও তাদেরকে ‘আলিহাহ্’ তথা ‘উপাস্যসমূহ’-ই বলত। কিন্তু আজকের মানুষেরা যখন ভাষা সম্পর্কে অজ্ঞ হয়ে গেল, তখন থেকে তারা আর ওগুলোকে ‘ইলাহ্’ তথা ‘উপাস্য’ বলে না। বরং তারা ওগুলোর নাম দিয়েছে শাইখ (একইভাবে পীর), বুজুর্গ, অলী, আউলিয়া, মাজার, দরবার প্রভৃতি।
বর্তমান যুগের শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিছ আমাদের সম্মানিত পিতা আশ শাইখুল ‘আল্লামাহ্ ইমাম রবী‘ বিন হাদী ‘উমাইর আল মাদখালী (হাফিয্বাহুল্লাহ্) [জন্মঃ ১৩৫১ হিঃ/১৯৩২ খ্রিঃ] বলেছেন, ’’فيجب أن نعرف معني ((لا إله إلا الله))؛ بأنه لا معبود بحق إلا الله، وأن غيره من الأنبياء جميعا والرسل والملائكة والصالحين لا يستحقون ذَرّّةًً من العبادة؛ بل هم كلهم عباد الله.‘‘ ‘‘আমাদের জন্য ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ ‘র এ অর্থ জানা ওয়াজিব যে, ‘‘লা মা‘বূদা বিহাক্বক্বিন ইল্লাল্লাহ্’’ তথা ‘আল্লাহ্ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই’। আর আল্লাহ্ ছাড়া সমস্ত নাবী, রসূল, ফিরিশতা, সৎ ব্যক্তিবর্গ- এদের কারোই অনু পরিমাণ ‘ইবাদত পাওয়ারও অধিকার নেই। বরং তাঁরা সকলেই আল্লাহর বান্দা।’’ [ইমাম রবী‘ আল মাদখালী (হাফিয্বাহুল্লাহ্), আদ দুর্রুন নাদ্বীদ মিন মুহাদ্বারাতিল ‘আক্বীদাতি ওয়াত তাওহীদ- শীর্ষক গ্রন্থ; মাজমূ‘উ রবী‘; খণ্ডঃ ১; পৃষ্ঠাঃ ১২৭; মিসর ছাপা (সন তারিখ বিহীন)] ১৫শ বক্তব্যঃ আশ শাইখুল ‘আল্লামাহ্ আল ফাক্বীহুল মুফাসসির ইমাম ‘উবাইদ বিন ‘আব্দুল্লাহ্ আল জাবিরী (হাফিয্বাহুল্লাহ্) [জন্মঃ ১৩৫৭ হিঃ] বলেছেন, ”قوله : ((ومعناه : لا معبود بحق إلا الله )) معناها لا معبود بحق إلا الله ، وتقدير لا معبود بحق أمر ضروري ومن يقول لا معبود إلا الله دون تقدير إما بحق أو حق يخطئ لا يفهم معنى لا إله إلا الله لأن معنى ذلك ينفي وجود المعبودات مطلقاً وهذا خلاف الواقع ، المعبودون موجودة في كل وقت ، ولكن المعبود بحق هو الله وحده هذا معنى أن الشهادة تشتمل على الكفر والإيمان ـ الكفر بما يعبد وبمن يعبد من دون الله ، والإيمان بعبادة الله وحده لا معبود بحق إلا الله وحده وأما من عبد وما عبد منذ أن عبدت الأصنام والأوثان إلى يوم الناس هذا عبادتهم باطلة وهم في اللغة يطلق عليهم آلهة كلها آلهة ، والعرب كانت تسميهم آلهة والناس اليوم لما جهلوا اللغة [ لا ] يسموهم آله ، يسمونهم مشايخ والصالحين والأولياء والأضرحة والمقامات أسماءٌ مغيرة فهي آله ، كل ما عبد من دون الله ولو حجراً أو شجراً أو شيطاناً أو ولياً لا فرق أي لا فرق بين أن يعبد الإنسان صالحاً أو يعبد شيطاناً أو طالحاً كلها آلهة بالباطل لا تستحق العبادة ولو كانوا من الصالحين.“ ‘‘কালিমাহ্ ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ এর অর্থ ‘‘লা মা‘বূদা বিহাক্বক্বিন ইল্লাল্লাহ্’’ তথা ‘আল্লাহ্ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই’। ‘‘লা মা‘বূদা’’ ‘র পরে ‘বিহাক্বক্বিন’ কে উহ্য মানা জরুরি বিষয়। যে ব্যক্তি ‘বিহাক্বক্বিন’ অথবা ‘হাক্বক্বুন’ কে উহ্য না মেনে বলে, ‘‘লা মা‘বূদা ইল্লাল্লাহ্’’ তথা ‘আল্লাহ্ ছাড়া কোন উপাস্য নেই’, সে ভুল করছে। সে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ ‘র অর্থ বোঝেনা। কেননা এই অর্থটি সমস্ত উপাস্যের অস্তিত্বকে ব্যাপকভাবে নাকচ করে দেয়। অথচ এটা বাস্তবতার বিপরীত। সর্বদাই সমস্ত উপাস্য মওজুদ রয়েছে। কিন্তু সত্যিকারের উপাস্য হলেন এক আল্লাহ্। এর মানে এই কালিমাহর প্রতি সাক্ষ্যদান কুফর এবং ঈমানকে শামিল করে। অর্থাৎ, আল্লাহ্ ছাড়া যা কিছুর বা যে কারো ‘ইবাদত করা হয়, তার প্রতি অবিশ্বাস করা (কুফুরী করা) এবং এক আল্লাহর ‘ইবাদতের প্রতি ঈমান আনা। সুতরাং এক আল্লাহ্ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই। পক্ষান্তরে মূর্তি ও প্রতিমা পূজার আদিলগ্ন থেকে শুরু করে আজঅবধি যতকিছুর বা যতজনের উপাসনা করা হয়েছে, তাদেরকে প্রদত্ত এই উপাসনা (‘ইবাদত) বাত্বিল।
এই অর্থ বাত্বিল। কেননা (বাস্তবে) আমরা দেখছি, অনেক উপাস্য রয়েছে। আল্লাহ্ তা’আলা কাফিরদের কথা জানিয়ে বলেছেন,
এগুলো পরিবর্তিত নাম মাত্র, এগুলোও ইলাহ্ তথা উপাস্য। আল্লাহ্ ছাড়া যা কিছুরই ‘ইবাদত করা হোক না কেনো, যদি তা পাথর, গাছ, শয়তান বা অলী হয়। তবুও একজন সৎব্যক্তির ‘ইবাদত করা এবং একজন অসৎব্যক্তি বা শয়তানের ‘ইবাদত করার মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। সবগুলোই বাত্বিল উপাস্য। এগুলো ‘ইবাদতের (প্রকৃত) হক্বদার নয়, যদিও তারা সৎব্যক্তি হোক না কেন (তবুও তারা বাত্বিল)।’’ [ইমাম ‘উবাইদ আল জাবিরী (হাফিয্বাহুল্লাহ্), শারহুল উস্বূলিছ ছালাছাহ্, পৃষ্ঠাঃ ২৫; ছাপা ও তারিখ বিহীন সফটকপি; সংগৃহীতঃ-www.ajurry com/vb/showthread.php?t=8604] ১৬শ বক্তব্যঃ আশ শাইখুল ‘আল্লামাহ্ স্বলিহ্ বিন ‘আব্দুল ‘আঝীঝ আলুশ শাইখ (হাফিয্বাহুল্লাহ্) [জন্মঃ ১৩৭৮ হিঃ] বলেছেন, ”ﻭﻫﺬﺍ ﻣﻌﻠﻮﻡ ﺃﻥ ﻣﺸﺮﻛﻲ ﻗﺮﻳﺶ ﻟﻢ ﻳﻜﻮﻧﻮﺍ ﻳﻨﺎﺯﻋﻮﻥ ﻓﻲ ﺍﻟﺮﺑﻮﺑﻴﺔ ، ﻓﺈﺫﻥ ﺻﺎﺭﺕ ﻫﺬﻩ ﺍﻟﻜﻠﻤﺔ ﺩﺍﻟﺔ ﻋﻠﻰ ﻏﻴﺮ ﻣﺎ ﺃﺭﺍﺩ ﺃﻭﻟﺌﻚ ، ﻭﻫﻮ ﻣﺎ ﺫﻛﺮﻧﺎﻩ ﺁﻧﻔﺎ ﻣﻦ ﺃﻥ ﻣﻌﻨﻰ ﻻ ﺇﻟﻪ ﻳﻌﻨﻲ : ﻻ ﻣﻌﺒﻮﺩ ، ﻓﻴﻜﻮﻥ ﺍﻟﺨﺒﺮ ﺇﻣﺎ ﺃﻥ ﻳﻜﻮﻥ ﺗﻘﺪﻳﺮﻩ ﻣﻮﺟﻮﺩ ، ﻓﻴﻜﻮﻥ ﺍﻟﻤﻌﻨﻰ : ﻻ ﻣﻌﺒﻮﺩ ﻣﻮﺟﻮﺩ ﺇﻻ ﺍﻟﻠﻪ ، ﻭﻫﺬﺍ ﺑﺎﻃﻞ؛ ﻷﻧﻨﺎ ﻧﺮﻯ ﺃﻥ ﺍﻟﻤﻌﺒﻮﺩﺍﺕ ﻛﺜﻴﺮﺓ ﻗﺪ ﻗﺎﻝ ﺟﻞ ﻭﻋﻼ : ﺃَﺟَﻌَﻞَ ﺍﻟْﺂﻟِﻬَﺔَ ﻣﺨﺒﺮﺍ ﻋﻦ ﻗﻮﻝ ﺍﻟﻜﻔﺎﺭ ﺃَﺟَﻌَﻞَ ﺍﻟْﺂﻟِﻬَﺔَ ﺇِﻟَﻬًﺎ ﻭَﺍﺣِﺪًﺍ ﻓﺎﻟﻤﻌﺒﻮﺩﺍﺕ ﻛﺜﻴﺮﺓ ﻭﺍﻟﻤﻌﺒﻮﺩﺍﺕ ﻣﻮﺟﻮﺩﺓ . ﻓﺈﺫﻥ ﺗﻘﺪﻳﺮ ﺍﻟﺨﺒﺮ ﺑﻤﻮﺟﻮﺩ ﻏﻠﻂ ، ﻭﻣﻦ ﺍﻟﻤﻌﻠﻮﻡ ﺃﻥ ﺍﻟﻤﺘﻘﺮﺭ ﻓﻲ ﻋﻠﻢ ﺍﻟﻌﺮﺑﻴﺔ ﺃﻥ ﺧﺒﺮ ﻻ ﺍﻟﻨﺎﻓﻴﺔ ﻟﻠﺠﻨﺲ ﻳﻜﺜﺮ ﺣﺬﻓُﻪ ﻓﻲ ﻟﻐﺔ ﺍﻟﻌﺮﺏ ، ﻭﻓﻲ ﻧﺼﻮﺹ ﺍﻟﻜﺘﺎﺏ ﻭﺍﻟﺴﻨﺔ؛ ﺫﻟﻚ ﺃﻥ ﺧﺒﺮ ﻻ ﺍﻟﻨﺎﻓﻴﺔ ﻟﻠﺠﻨﺲ ﻳﺤﺬﻑ ﺇﺫﺍ ﻛﺎﻥ ﺍﻟﻤﻘﺎﻡ ﻳﺪﻝ ﻋﻠﻴﻪ ، ﻭﺇﺫﺍ ﻛﺎﻥ ﺍﻟﺴﺎﻣﻊ ﻳﻌﻠﻢ ﻣﺎ ﺍﻟﻤﻘﺼﻮﺩ ﻣﻦ ﺫﻟﻚ . ﻭﻗﺪ ﻗﺎﻝ ﺍﺑﻦ ﻣﺎﻟﻚ ﻓﻲ ﺁﺧﺮ ﺑﺎﺏ ﻻ ﺍﻟﻨﺎﻓﻴﺔ ﻟﻠﺠﻨﺲ ﺣﻴﻨﻤﺎ ﺳﺎﻕ ﻫﺬﻩ ﺍﻟﻤﺴﺄﻟﺔ : ﻭﺷﺎﻉ ﻓﻲ ﺫﺍ ﺍﻟﺒﺎﺏ . . . . . . . . ﻳﻌﻨﻲ ﺑﺎﺏ ﻻ ﺍﻟﻨﺎﻓﻴﺔ ﻟﻠﺠﻨﺲ : ﻭﺷﺎﻉ ﻓﻲ ﺫﺍ ﺍﻟﺒﺎﺏ ﺇﺳﻘﺎﻁ ﺍﻟﺨﺒﺮ . . . ﺇﺫﺍ ﺍﻟﻤــﺮﺍﺩ ﻣـﻊ ﺳـﻘﻮﻃﻪ ﻇﻬـﺮ ﺇﺫﺍ ﻇﻬﺮ ﺍﻟﻤﺮﺍﺩ ﻣﻊ ﺣﺬﻑ ﺍﻟﺨﺒﺮ ﻓﺈﻧﻚ ﺗﺤﺬﻑ ﺍﻟﺨﺒﺮ؛ ﻷﻥ ﺍﻟﻜﻼﻡ ﺍﻷﻧﺴﺐ ﺃﻥ ﻳﻜﻮﻥ ﻣﺨﺘﺼﺮﺍ ﻛﻤﺎ ﻗﺎﻝ - ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﺼﻼﺓ ﻭﺍﻟﺴﻼﻡ - : ﻻ ﻋﺪﻭﻯ ﻭﻻ ﻃﻴﺮﺓ ﻭﻻ ﻫﺎﻣﺔ ﻭﻻ ﺻﻔﺮ ﻭﻻ ﻧﻮﺀ ﻭﻻ ﻏﻮﻝ . ﺃﻳﻦ ﺍﻟﺨﺒﺮ؟ ﻛﻠﻬﺎ ﻣﺤﺬﻭﻓﺎﺕ؛ ﻷﻧﻬﺎ ﻣﻌﻠﻮﻣﺔ ﻟﺪﻯ ﺍﻟﺴﺎﻣﻊ؛ ﺇﺫﻥ ﻓﺎﻟﺨﺒﺮ ﻫﻨﺎ ﻣﻌﻠﻮﻡ ، ﻭﻫﻮ ﺃﻧﻪ ﻟﻴﺲ ﺍﻟﺨﺒﺮ ﻣﻮﺟﻮﺩﺍ ، ﻳﻌﻨﻲ ﻳﻘﺪﺭ ﺑﻤﻮﺟﻮﺩ؛ ﻷﻥ ﺍﻵﻟﻬﺔ ﺍﻟﺘﻲ ﻋﺒﺪﺕ ﻣﻊ ﺍﻟﻠﻪ ﻣﻮﺟﻮﺩﺓ ، ﻓﻴﻘﺪﺭ ﺍﻟﺨﺒﺮ ﺑﻘﻮﻟﻚ ﺑﺤﻖ ، ﺃﻭ ﺣﻖ ﻻ ﺇﻟﻪ ﺑﺤﻖ ﻳﻌﻨﻲ ﻻ ﻣﻌﺒﻮﺩ ﺑﺤﻖ ﺃﻭ ﻻ ﻣﻌﺒﻮﺩ ﺣﻖ ﺇﻻ ﺍﻟﻠﻪ . ﺇﻥ ﻗﺪﺭﺕ ﺍﻟﻈﺮﻑ ﻓﻼ ﺑﺄﺱ ، ﺃﻭ ﻗﺪﺭﺕ ﻛﻠﻤﺔ ﻣﻔﺮﺩﺓ ﺣﻖ ﻻ ﺑﺄﺱ ، ﻻ ﻣﻌﺒﻮﺩ ﺣﻖ ﺇﻻ ﺍﻟﻠﻪ ، ﻫﺬﺍ ﻣﻌﻨﻰ ﻛﻠﻤﺔ ﺍﻟﺘﻮﺣﻴﺪ ﻓﻴﻜﻮﻥ ﺇﺫﻥ ﻛﻞ ﻣﻦ ﻋُﺒِﺪَ ﻏﻴﺮ ﺍﻟﻠﻪ - ﺟﻞ ﻭﻋﻼ - ﻋُﺒِﺪَ ﻧﻌﻢ ، ﻭﻟﻜﻦ ﻫﻞ ﻋﺒﺪ ﺑﺎﻟﺤﻖ ﺃﻡ ﻋﺒﺪ ﺑﺎﻟﺒﺎﻃﻞ ، ﻭﺍﻟﻈﻠﻢ ﻭﺍﻟﻄﻐﻴﺎﻥ ﻭﺍﻟﺘﻌﺪﻱ ﻋﺒﺪ ﺑﺎﻟﺒﺎﻃﻞ ، ﻭﺍﻟﻈﻠﻢ ﻭﺍﻟﻄﻐﻴﺎﻥ ﻭﺍﻟﺘﻌﺪﻱ ، ﻭﻫﺬﺍ ﻳﻔﻬﻤﻪ ﺍﻟﻌﺮﺑﻲ ﻣﻦ ﺳﻤﺎﻉ ﻛﻠﻤﺔ ﻻ ﺇﻟﻪ ﺇﻻ ﺍﻟﻠﻪ، ﻭﻟﻬﺬﺍ ﺑﺌﺲ ﻗﻮﻡ ﻛﻤﺎ ﻗﺎﻝ ﺍﻟﺸﻴﺦ ﻣﺤﻤﺪ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻮﻫﺎﺏ -ﺭﺣﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ - : ﺑﺌﺲ ﻗﻮﻡٍ ﺃﺑﻮ ﺟﻬﻞ ﺃﻋﻠﻢ ﻣﻨﻬﻢ ﺑﻼ ﺇﻟﻪ ﺇﻻ ﺍﻟﻠﻪ ، ﻳﻔﻬﻢ ﻫﺬﻩ ﺍﻟﻜﻠﻤﺔ ﻭﺃﺑﻰ ﺃﻥ ﻳﻘﻮﻟﻬﺎ ، ﻭﻟﻮ ﻛﺎﻧﺖ ﻛﻤﺎ ﻳﺰﻋﻢ ﻛﺜﻴﺮ ﻣﻦ ﺃﻫﻞ ﻫﺬﺍ ﺍﻟﻌﺼﺮ ﻭﻣﺎ ﻗﺒﻠﻪ ﻟﻘﺎﻟﻮﻫﺎ ﺑﺴﻬﻮﻟﺔ ، ﻭﻟﻢ ﻳﺪﺭﻭﺍ ﻣﺎ ﺗﺤﺘﻬﺎ ﻣﻦ ﺍﻟﻤﻌﺎﻧﻲ ﻟﻜﻦ ﻳﻌﻠﻢ ﺃﻥ ﻣﻌﻨﺎﻫﺎ ﻻ ﻣﻌﺒﻮﺩ ﺣﻖ ﺇﻻ ﺍﻟﻠﻪ ، ﻭﺃﻥ ﻋﺒﺎﺩﺓ ﻏﻴﺮﻩ ﺇﻧﻤﺎ ﻫﻲ ﺑﺎﻟﻈﻠﻢ، فهل يقرون على أنفسهم بالظلم، والبغي، والعدوان !؟ فحقيقة معنى ((لا إله إلا الله )) هي ما شرحناه.“ ‘‘এটা সুবিদিত বিষয় যে, ক্বুরাইশ মুশরিকরা আল্লাহর রুবুবিয়্যাতের (প্রভুত্বের) ক্ষেত্রে বিবাদ করেনি। সুতরাং, এই কালিমাহ্ তাদের উদ্দেশ্য পরিপন্থী বিষয়কে নির্দেশকারী বাক্যে পরিণত হল। কিছু পূর্বেই আমরা এটা আলোচনা করেছি যে, ‘লা ইলাহা’ এর অর্থ ‘লা মা‘বূদা’ তথা ‘কোন উপাস্য নেই’ করলে, ‘লা’ বিশেষ্যটির উহ্য খবর (বিধেয়) মানতে হয়, আর তা হল ‘মাওজূদ’। তখন কালিমাহর অর্থ হবে- ‘লা মা‘বূদা মাওজূদুন ইল্লাল্লাহ্’ তথা ‘আল্লাহ্ ছাড়া কোন উপাস্যের অস্তিত্ব নেই’ বা ‘আল্লাহ্ ছাড়া কোন উপাস্য নেই’। ’’أَجَعَلَ الْآلِهَةَ إِلَٰهًا وَاحِدًا ۖ إِنَّ هَٰذَا لَشَيْءٌ عُجَابٌ.‘‘ 
আবূ জাহল এই কালিমাহর মর্মার্থ বুঝেছিল। আর সেকারণেই সে তা বলতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করেছিল। এর অর্থ যদি ‘‘লা মা‘বূদা মাওজূদুন ইল্লাল্লাহ্’’ তথা ‘‘আল্লাহ্ ছাড়া কোন উপাস্য নেই’’ হত, যেমনটি বর্তমান ও অতীত যুগের অনেকেই ধারণা করেছে। তাহলে ওরা (মাক্কাহর কাফিররা) এই কালিমাহ্ খুব সহজেই বলত। মূলত এই ধারণাকারীরা এর মর্মার্থ উপলব্ধি করতে পারেনি। কিন্তু মাক্কাহর কাফিররা জানত যে, এই কালিমাহর অর্থ ‘‘আল্লাহ্ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই’’ এবং আল্লাহ্ ছাড়া অন্যের ‘ইবাদত করা যুলম। তারা কি নিজেদের উপর যুলম, সীমালঙ্ঘন এবং অবাধ্যচারিতাকে স্বীকৃতি দিবে ? অতএব বুঝা গেল, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ ‘র প্রকৃত অর্থ সেটাই, যা আমরা ব্যাখ্যা করলাম।’’
‘‘(কাফিররা বলত,) সে কি সকল উপাস্যকে এক উপাস্য (আল্লাহ্) বানিয়ে নিয়েছে ? এটা তো বড়ই আশ্চর্যের ব্যাপার!’’ [সূরাহ্ স্বদঃ ৫] অতএব বুঝা গেল, অসংখ্য উপাস্য আছে এবং অসংখ্য উপাস্য মওজুদও রয়েছে। সুতরাং ‘মাওজূদ’- কে উহ্য খবর (বিধেয়) ধরা ভুল। এটা সুবিদিত যে, আরবি ভাষায় এবং ক্বুরআন সুন্নাহর দলিলে অধিকাংশ সময় ‘লায়ে নাফী জিনস’ তথা ‘শ্রেণিকে নাকচকারী (নাবোধক/Negative) লা’ এর খবর (বিধেয়) বিলুপ্ত হয়, আর বিষয়টি আরবি গ্রামারে সুসাব্যস্ত। আর ‘লায়ে নাফী জিনস’ এর খবর (বিধেয়) তখন বিলুপ্ত হয়, যখন প্রসঙ্গ তা স্পষ্ট করে দেয় (অর্থাৎ, তা সুপরিচিত বা জানা থাকে)। যখন শ্রোতার জানা থাকে যে, এর (এই বাক্যের) দ্বারা কী উদ্দেশ্য। নাহূবিদ ইবনু মালিক (রহিমাহুল্লাহ্) ‘লায়ে নাফী জিনস’ শীর্ষক অধ্যায়ের শেষে এই মাসআলাহ্ আলোচনা করতে গিয়ে বলেছেন, ’’وشاع في ذا الباب إسقاط الخبر ~~ إذا المراد مع سقوطه ظهر‘‘ ‘‘এই অধ্যায়ে খবর (বিধেয়) বিলুপ্ত হওয়ার ঘটনা বিপুল পরিমাণে রয়েছে, যখন তা বিলুপ্তি সত্ত্বেও তার উদ্দেশ্য সুস্পষ্ট থাকে।’’ যখন খবর (বিধেয়) বিলুপ্ত করার পরও তার উদ্দেশ্য স্পষ্ট থাকে, তখন তুমি খবরকে বিলুপ্ত করে দিবে। কেননা অধিকতর উপযোগী কথা সংক্ষিপ্ত হয়ে থাকে। যেমন রসূল (স্বল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ’’لاَ عَدْوَى وَلاَ طِيَرَةَ وَلاَ صَفَرَ وَلاَ هَامَة وَلاَ نَوْءَ وَلاَ غُولَ.‘‘ ‘‘সংক্রামক ব্যাধি নেই, কুলক্ষণ নেই, অনাহারে পেট কামড়ানো পোকা নেই, হামাহ্ তথা মৃত মানুষের আত্মা হতে পেচার জন্ম নেই, নক্ষত্র (প্রভাবে বর্ষণ) নেই, পথ ভুলানো ভূত-প্রেত নেই। অর্থাৎ, এসবের কোন অস্তিত্ব নেই।’’ [স্বহীহ্ মুসলিম, হা/২০২০, ২০২১, ২০২২] (হাদীছে উল্লিখিত বাক্যগুলোতে) খবর (বিধেয়) কোথায় ? সবগুলোর খবর বিলুপ্ত হয়েছে। কেননা শ্রোতার নিকটে তা অজানা নয়। একইভাবে এখানেও (কালিমাহয়) খবর জানা রয়েছে। আর তা অবশ্যই ‘মাওজূদ’ নয়। অর্থাৎ, ‘মাওজূদ’-কে উহ্য খবর মানা (এটা চলবে না)। কেননা আল্লাহর সাথে (শরীক করে) অনেক উপাস্যের ‘ইবাদত করা হয়, যা মওজুদ রয়েছে। সুতরাং ‘বিহাক্বক্বিন’ অথবা ‘হাক্বক্বুন’ কে উহ্য খবর (বিধেয়) মানতে হবে। ‘‘লা ইলাহা বিহাক্বক্বিন’’ মানে ‘‘লা মা‘বূদা বিহক্বক্বিন’’ অথবা ‘‘লা মা‘বূদা হাক্বক্বুন ইল্লাল্লাহ্’’। তুমি যদি য্বরফ হিসেবে ‘বিহাক্বক্বিন’ কে উহ্য খবর মানো, তাতে কোন সমস্যা নেই। আবার তুমি যদি একক শব্দ ‘হাক্বক্বুন’ কে উহ্য খবর মানো, তাতেও কোন সমস্যা নেই। ‘লা মা‘বূদা হাক্বক্বুন ইল্লাল্লাহ্’’ এটাই কালিমাতুত তাওহীদের অর্থ। যেহেতু আল্লাহ্ ব্যতীত সকল মা’বূদেরই (উপাস্যেরই) ‘ইবাদত (উপাসনা) করা হয়। কিন্তু এটা কি হক্বভাবে করা হয়, নাকি সীমালঙ্ঘন, অবাধ্যতা, যুলম ও বাত্বিলের অনুসরণে করা হয় ? উত্তরঃ সীমালঙ্ঘন, অবাধ্যতা, যুলম ও বাত্বিলের অনুসরণে করা হয়। একজন আরব কালিমাহ্ ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ শুনে এমনটাই বুঝে থাকে। একারণেই শাইখ মুহাম্মাদ বিন ‘আব্দুল ওয়াহ্হাব (রহিমাহুল্লাহ্) বলেছেন, ‘‘এরা (বর্তমান মুশরিকরা) কত নিকৃষ্ট জাতি, স্বয়ং আবূ জাহলও ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ সম্পর্কে তাদের চেয়ে বেশি জানত!’’ [শাইখ স্বলিহ্ আলুশ শাইখ (হাফিয্বাহুল্লাহ্), আত তামহীদ লি শারহি কিতাবিত তাওহীদ; পৃষ্ঠাঃ ৭৭-৭৮; দারুত তাওহীদ, রিয়াদ্ব (রিয়াদ) ছাপা; সনঃ ১৪২৩ হিঃ/২০০২ খ্রিঃ (১ম প্রকাশ)] ১৭শ বক্তব্যঃ আশ শাইখুল ‘আল্লামাহ্ আবূ ‘আব্দুল্লাহ্ মুহাম্মাদ বিন সা‘ঈদ রসলান (হাফিয্বাহুল্লাহ্) [জন্মঃ ১৯৫৫ খ্রিঃ] বলেছেন, ’’ومعنى (لا إله إلا الله): لا معبود بحق إلا الله، ولهذا عرف مشركو قريش معنى لا إله إلا الله، فقالوا متعجبين (أَجَعَلَ الْآلِهَةَ إِلَٰهًا وَاحِدًا ۖ إِنَّ هَٰذَا لَشَيْءٌ عُجَابٌ).‘‘
এখানে আল্লাহ্ খবর থেকে বদল হয়েছে। লোকেরা এদিকে লক্ষ্য করে না যে, ইলাহ্ মানে মা’লূহ্, যার অর্থ মা‘বূদ (উপাস্য)। তারা ‘মাওজূদুন’ বা ‘কা-ইনুন’ বা ‘বিল উজূদ’ কে উহ্য খবর মানে। অথচ সবগুলোই বাত্বিল। কেননা প্রাক আরবের মুশরিকরা যা স্বীকৃতি দিয়েছিল, এই বাত্বিল অর্থও তারই স্বীকৃতি দেয়। আর তা হল- নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সৃষ্টিকর্তা, রিজিকদাতা এবং (বিশ্ব চরাচরের) নিয়ন্ত্রক।
‘‘কালিমাহ্ ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ ‘র অর্থ হচ্ছে ‘‘লা মা‘বূদা বিহাক্বক্বিন ইল্লাল্লাহ্’’ তথা ‘আল্লাহ্ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই’। একারণে ক্বুরাইশ মুশরিকরা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ ‘র অর্থ বুঝেছিল। তাই তারা আশ্চর্য হয়ে বলেছিল, ‘সে কি সব উপাস্যকে এক উপাস্য বানিয়ে ফেলেছে ? এটা তো বড়ই আশ্চর্যের ব্যাপার!’ [সূরাহ্ স্বদঃ ৫]’’ [শাইখ মুহাম্মাদ রসলান (হাফিয্বাহুল্লাহ্), শুরূত্বু লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ ওয়া নাওয়াক্বিদ্বুল ইসলাম; পৃষ্ঠাঃ ১১; দারুল ফুরক্বান, আলজেরিয়া ছাপা; প্রথম প্রকাশ (সন তারিখ বিহীন)] ১৮শ বক্তব্যঃ আশ শাইখুল ‘আল্লামাহ্ ‘আব্দুর রঝঝাক্ব বিন ‘আব্দুল মুহ্সিন আল ‘আব্বাদ আল বদর (হাফিয্বাহুল্লাহ্) [জন্মঃ ১৩৮২ হিঃ] বলেছেন, ’’فإن لا إله إلا الله معناها: لا معبود حق إلا إله واحد، وهو الله وحده لا شريك له، والإله في اللغة: هو المعبود، ولا إله إلا الله: أي: لا معبود حق إلا الله.‘‘ ‘‘কালিমাহ্ ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ ‘র অর্থ হল- এক উপাস্য ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই। তিনি হলেন আল্লাহ্, যিনি এক ও অদ্বিতীয় এবং যার কোন শরীক নেই। আভিধানিক অর্থে ইলাহ্ হচ্ছে মা‘বূদ। সুতরাং ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ মানে ‘‘লা মা‘বূদা হাক্বক্বুন ইল্লাল্লাহ্’’ তথা ‘আল্লাহ্ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই’।’’ [শাইখ ‘আব্দুর রঝঝাক্ব আল বদর (হাফিয্বাহুল্লাহ্), ফিক্বহুল আদ‘ইয়াতি ওয়াল আযকার; পৃষ্ঠাঃ ১৬০; মাকতাবাতু দারিল মিনহাজ, রিয়াদ্ব (রিয়াদ) ছাপা; সনঃ ১৪৩৪ হিজরী (১ম প্রকাশ)] ১৯শ বক্তব্যঃ মাসজিদে নাবাবীর মা‘হাদুল হারামের সম্মানিত মুদার্রিস শাইখ হাইছাম বিন মুহাম্মাদ জামীল সারহান (হাফিয্বাহুল্লাহ্) [জন্মঃ ১৩৯১ হিঃ] বলেছেন, ’’لو قال قائل: معنى شهادة أن ((لا إله الا الله)) لا معبود إلا الله؟ قلنا هذا كلام باطل؛ لأنه بهذا الكلام يصحح كل ما يُعبَد من دون الله، لكن عندما يقول (بحق) فهذا دليل أنه يكفر بجميع ما يُعبَد من دون الله وأن لا معبود بحق إلا الله.‘‘ ‘‘কেউ যদি বলে যে, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ ‘র প্রতি সাক্ষ্য দেয়ার অর্থ হল- ‘‘লা মা‘বূদা ইল্লাল্লাহ্’’ তথা ‘আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই’ ? আমরা বলি, এই কথাটি বাত্বিল। কেননা এই অর্থ করার দ্বারা সে আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য সমস্ত উপাস্যকে সত্যায়ন করছে। কিন্তু সে যখন ‘বিহাক্বক্বিন’ তথা ‘সত্য’ কথাটি বলবে, তখন এটা প্রমাণিত হবে যে, আল্লাহ্ ব্যতীত সকল উপাস্যকে সে অস্বীকার করেছে এবং বিশ্বাস করেছে যে, আল্লাহ্ ব্যতীত সত্য কোন উপাস্য নেই।’’ [শাইখ হাইছাম বিন জামীল সারহান (হাফিয্বাহুল্লাহ্), শারহু ছালাছাতিল উস্বূলি ওয়া আদিল্লাতিহা ওয়াল ক্বাওয়া‘ইদিল আরবা‘; পৃষ্ঠাঃ ২৯; (ফ্রি কপি) সন তারিখ বিহীন] ২০শ বক্তব্যঃ শাইখ মুস্বত্বাফা বিন মুবরাম (হাফিয্বাহুল্লাহ্) বলেছেন, ”والخبر إما نقدره مفرد فنقول: ((حق)) وإما أن نقدره شبه جملة ونقول: ((بحق)) وكله صواب إلا أن الأول أقوى وأحق. و((الله)) هنا بدل من الخبر، ولا يلتفتون إلى أن معنى ((إلٰه)) مألوه بمعنى معبود، وإنما يقدرون ((الخبر)) موجود أو كائن أو بالوجود، وكل هذا باطل لأنه يقرر ما عرفه المشركون الأولون من العرب وهو أن الله هو الخالق، الرزاق، المدبر، وهذه الكلمات جائت لتقرر ما أنكروه لا ما أقروا به وهو إفراده تعالى بالإلهية لا إفراده تعالى بالربوبية، فافهم هذا فإنه عقد التوحيد وأصله وأساسه. إذًا فمعنى ((لا إله إلا الله)) لا معبود، لأننا قلنا ((إلٰه)) مألوه، معبود، فعال بمعنى مفعول، لا إله حق إلا الله.“ ‘‘কালিমাহ্ ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ বাক্যে আমরা যদি মুফরাদকে (একক শব্দকে) উহ্য খবর (বিধেয়) ধরি, তাহলে বলব ‘হাক্বক্বুন’। আর যদি শিবহে জুমলাহ্কে উহ্য খবর ধরি, তাহলে আমরা বলব ‘বিহাক্বক্বিন’। দুইটাই সঠিক, তবে প্রথমটি অধিক শক্তিশালী এবং বেশি সঠিক।
’’وَاعْبُدْ رَبَّكَ حَتَّىٰ يَأْتِيَكَ الْيَقِينُ.‘‘
অথচ এই কালিমাহ্ এসেছে তারা যা অস্বীকার করেছিল, তাকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য, তারা যা স্বীকার করেছিল তাকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য নয়। আর তা হল ‘ইবাদতের ক্ষেত্রে আল্লাহ্কে এক গণ্য করা, প্রভুত্বের ক্ষেত্রে এক গণ্য করা নয়। এটা ভালোভাবে অনুধাবন করো। কেননা ঐটাই তাওহীদের বাঁধন, ভিত্তি এবং মূল। সুতরাং ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ ‘র অর্থ হচ্ছে, লা মা‘বূদা। যেহেতু আমরা বলেছি যে, মাফ‘ঊলের অর্থে ফি‘আলের ওজনে ইলাহ্ মানে হল মা’লূহ্ বা মা‘বূদ। সবমিলিয়ে এর অর্থ হল ‘লা ইলাহা হাক্বক্বুন ইল্লাল্লাহ্’ তথা ‘আল্লাহ্ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই’।’’ [শাইখ মুস্বত্বাফা বিন মুবরাম (হাফিয্বাহুল্লাহ্), শারহু নায্বমি শুরূত্বি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্; পৃষ্ঠাঃ ১০; সন তারিখ বিহীন (আজুর্রি ডট কম থেকে সংগৃহীত সফটকপি)] কিছু শুবহাতের জবাবঃ যারা কালিমাহর বাত্বিল অর্থ করেন, তারা নিজেদের অবস্থানকে ডিফেন্ড করতে গিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছেন এবং সাভাবিকভাবেই কিছু শুবহাতের (সংশয়) সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর অনুগ্রহে তাদের সৃষ্ট কিছু শুবহাতের জবাব নিম্নে প্রদত্ত হল। শুবহাত-১ কালিমাহর শাব্দিক অনুবাদ তো এটাই হয় যে, ‘আল্লাহ্ ছাড়া কোন উপাস্য নেই’। যারা ‘শাব্দিক অর্থ’ ‘শাব্দিক অর্থ’ করে লম্ফঝম্ফ করছেন এবং এই দাবির মাধ্যমে হক্বকে ঠেকিয়ে রাখার চিন্তাভাবনা করছেন, তারা মূলত অজ্ঞতা ও হঠকারিতার নোংরা সরোবরে ডুব দিয়েছেন (মা‘আযাল্লাহ্)। আমরা তাদের এই দাবির খণ্ডন করছি এইভাবে- ১/সাধারণভাবে অনুবাদের ক্ষেত্রে কোন ভাষাতেই ‘ওয়ার্ড বাই ওয়ার্ড’ অনুবাদ করা হয় না। কেননা এতে অনুবাদ সুখপাঠ্য হয় না। ২/প্রত্যেক ভাষাতেই এমন অনেক বাক্য আছে, যেগুলোর শাব্দিক অনুবাদ করা হলে মূল অর্থ চেইঞ্জ হয়ে যাবে। ৩/সবচেয়ে বড় কথা, যেসব বাক্য শরী‘আহ্প্রণেতা বলে থাকেন, তার অর্থ ও ব্যাখ্যা ব্যক্তি নিজের প্রবৃত্তি অনুযায়ী করবে, এটা কাম্য নয়। বরং শরী‘আহ্প্রণেতার কথা আমাদেরকে বুঝতে হবে সালাফদের মানহাজ এবং ‘আলিমদের সঠিক বুঝ অনুসারে। ৪/ক্বুরআনের একটি বাক্য বলি, যার অনুবাদ আমাদের জানামতে কোন অনুবাদকই শাব্দিক করেননা। বরং শাব্দিক অনুবাদ করা হলে অনুবাদ অনুপযোগী এবং ভুল হবে। আয়াতটি হল- : ذَٰلِكَ الْكِتَابُ لَا رَيْبَ ۛ فِيهِ ۛ هُدًى لِلْمُتَّقِينَ ‘‘এই সেই কিতাব, যাতে কোন সন্দেহ নেই, মুত্তাক্বীদের জন্য এ গ্রন্থ পথনির্দেশ।’’ নোবেল কুরআনে ‘আল্লামাহ্ তাক্বিউদ্দীন হিলালী এবং শাইখ ড. মুহসিন খান (রহিমাহুমাল্লাহ্) ‘র অনুবাদ- ‘‘This is the Book (the Quran), whereof there is no doubt, a guidance to those who are Al-Muttaqun.’’ [সূরাহ্ বাক্বারাহ্ঃ ২] আয়াতে ‘যালিকা’ শব্দের অর্থ- ঐ, উহা, ওটা, ঐটা, ঐটি। মু‘জামুল গনীতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে- ذَلِكَ : هِيَ اسْمُ إِشارَةٍ لِلبَعيدِ : :ذَلِكَ الرَّجُلُ- ذَلِكَ الأَمْرُ. ‘‘যালিকা একটি ইঙ্গিতবাচক বিশেষ্য, যা দূরবর্তীর অর্থে ব্যবহৃত হয়। যেমন: যালিকার রজুল তথা ঐ লোক, যালিকাল আমর তথা ঐ বিষয়।’’ কিন্তু আয়াতে কেন যালিকার অর্থ করা হল, এই গ্রন্থ বা দিস বুক ? উত্তর শুনুন। ইমাম শাওকানী (রহিমাহুল্লাহ্) [মৃতঃ ১২৫০ হিঃ] বলছেন, ‘‘ইবনু জারীর বলেন, ইবনু ‘আব্বাস (রদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহুমা) বলেছেন, ‘যালিকাল কিতাব’ অর্থ- এই কিতাব। এছাড়াও মুজাহিদ, ইকরামা, সা‘ঈদ বিন জুবাইর, সুদ্দী, মুক্বাতিল, ঝাইদ বিন আসলাম ও ইবনু জুরাইজ এই মত পোষণ করেছেন। ইমাম বুখারী আবূ ‘উবাইদাহ্ থেকে এই মতটিই বর্ণনা করেছেন। আর আরবরা দূরবর্তী ও অনুপস্থিত বিষয়ের ইশারাকে নিকটবর্তী ও উপস্থিত বিষয়ের ইশারার স্থলে ব্যবহার করে থাকে।’’ [ইমাম শাওকানী (রহিমাহুল্লাহ্), ফাতহুল ক্বদীর; খণ্ডঃ ১; পৃষ্ঠাঃ ৩৩; দারুন নাওয়াদির, কুয়েত ছাপা; সনঃ ১৪৩১ হিঃ/২০১০ খ্রিঃ] আয়াতে আমরা যালিকার অর্থ ‘ঐ বা ঐটা’ না করে ‘এই’ অর্থ করার কারণ এই যে, সালাফগণ যালিকার অর্থ ‘এই’-ই করেছেন। এটা মুফাসসিরকুল শিরোমনি ইবনু ‘আব্বাস (রদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহুমা) ‘র তাফসীর। বিধায় আয়াতে যালিকার অর্থ ‘এই’ করা হয়েছে। আল্লাহু আ‘লাম। ৫/আসুন, আমরা আরেকটা আয়াত দেখি, যার শাব্দিক অর্থ করা হলে ভুল হবে। আয়াতটি হল-
নযরে ছানী-
‘‘আর তোমার মৃত্যু (ইয়াক্বীন) উপস্থিত না হওয়া পর্যন্ত তুমি তোমার রবের ‘ইবাদত করো।’’ [সূরাহ্ হিজরঃ ৯৯] মূলত ইয়াক্বীন শব্দের অর্থ- নিশ্চিত, নিশ্চয়তা, সন্দেহহীন, দৃঢ় বিশ্বাস। তবে এই শব্দ ‘মৃত্যু’ অর্থেও ব্যবহৃত হয়। কিন্তু আয়াতে এর অর্থ ‘মৃত্যু’ হবে, তা আমরা কিভাবে জানব ? উত্তর: সালাফদের তাফসীর অনুযায়ী। ইয়াক্বীন শব্দের তাফসীর ‘মৃত্যু’ হবে। এই তাফসীর করেছেন, তাবি‘ঈ সালিম বিন ‘আব্দুল্লাহ্ বিন ‘উমার। তাঁর কাছ থেকে এটা বর্ণনা করেছেন ইমাম বুখারী এবং ইমাম ইবনু জারীর। আর এই মত পোষণ করেছেন মুজাহিদ, হাসান, ক্বাতাদাহ্, ‘আব্দুর রহমান বিন ঝাইদ বিন আসলাম এবং অন্যান্যরা। [দ্রঃ- ইমাম ইবনু কাছীর (রহিমাহুল্লাহ্), তাফসীরুল ক্বুরআনিল ‘আয্বীম; খণ্ডঃ ৪; পৃষ্ঠাঃ ৫৫৩; দারু ত্বইয়্যিবাহ্, রিয়াদ্ব (রিয়াদ) ছাপা; সনঃ ১৪২০ হিঃ/১৯৯৯ খ্রিঃ (২য় প্রকাশ)] এরকম উদাহরণ খুব অপ্রতুল নয়। ক্বুরআন সুন্নাহয় এরকম উদাহরণ আরো অনেক রয়েছে। উপরিউক্ত পয়েন্টগুলো থেকে এটাই প্রতীয়মান হল যে, বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারীদের ‘শাব্দিক অনুবাদ’ এর দাবি বাত্বিল। শুবহাত-২ আলিমগণ কি বাংলা জানেন যে, তারা অনুবাদ করলেন- ‘আল্লাহ্ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই’ ? এই শুবহাতের জবাব নিম্নরূপ:- ১/আগেও বলেছি, এখনও বলছি, যেসব বাক্য শরী‘আহ্প্রণেতা বলে থাকেন, তার অর্থ ও ব্যাখ্যা ব্যক্তি নিজের প্রবৃত্তি অনুযায়ী করবে, এটা কখনোই কাম্য নয়। বরং শরী‘আহ্প্রণেতার কথা আমাদেরকে বুঝতে হবে সালাফদের মানহাজ এবং ‘আলিমদের সঠিক বুঝ অনুসারে। ২/আমরা যে ভাষাকেই ভাষান্তরিত করতে যাই না কেন, অবশ্যই সেই ভাষার বিশেষজ্ঞদের মতামতকে ফলো করি। বাংলাকে যদি ইংরেজিতে রূপান্তরিত করি, তাহলে যেমন বাংলা ভাষাবিজ্ঞানীদের মতামতকে গুরুত্ব দিই। ঠিক তেমনি আরবিকে বাংলায় রূপান্তরিত করার সময় আমরা আরবি ভাষাবিজ্ঞানীদের বুঝ ও মতামতকে গুরুত্ব দিই। আর বিষয়টি যখন ক্বুরআন সুন্নাহর হয়, তখন আমরা সত্যিকারের ‘আলিমদের কথাকে গুরুত্ব দিই এবং নিজেরা মত পেশ না করে তাঁদের দেওয়া মতকেই মেনে নিই। সুতরাং একথা বলা বড়ই হাস্যকর যে, ইমাম ফাওঝান কি বাংলা জানেন যে, তিনি এরূপ অনুবাদ করলেন! ৩/‘আলিমগণ যদি বাংলায় কালিমাহ্ ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ ‘র অনুবাদ করতেন, তাহলে কখনোই এটা অর্থ করতেন না যে, ‘আল্লাহ্ ছাড়া কোন উপাস্য নেই’। তাঁদের উক্তিগুলোই এ ব্যাপারে জ্বলজ্যান্ত প্রমাণ। আর একথার আরো প্রমাণ হচ্ছে, অনারব ভাষা ইংরেজিতে ক্বুরআনের অনুবাদ। ‘আলিমের অনুবাদ কেমন হয়, দেখুন। শাইখুল মাগরিব ‘আল্লামাহ্ তাক্বিউদ্দীন হিলালী এবং শাইখ ড. মুহসিন খান (রহিমাহুমাল্লাহ্) কর্তৃক ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ ‘র অনুবাদ- ’’فَاعْلَمْ أَنَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا اللَّهُ.‘‘ ‘‘So know (O Muhammad SAW) that La ilaha ill-Allah (none has the right to be worshipped but Allah).’’ ‘‘অতএব (হে মুহাম্মাদ) জেনে রাখো যে, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ তথা ‘আল্লাহ্ ছাড়া কারো ‘ইবাদত পাওয়ার হক্ব বা অধিকার নেই’।’’ [দি নোবেল কুরআন, পৃষ্ঠাঃ ৬৮৯; বাদশাহ ফাহাদ প্রিন্টিং প্রেস, মাদীনাহ্ ছাপা] উপরিউক্ত পয়েন্টগুলোর মাধ্যমে স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়ে গেল যে, বিভ্রান্তদের উল্লিখিত দাবি ভ্রান্ত বৈ আর কিছুই নয়। উপসংহারঃ পরিশেষে বলি, শরী‘আহ্ উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তি নয় যে, আপনি এখানে স্বেচ্ছাচারের মত যা ইচ্ছা তাই করবেন। শরী‘আহ্ মানতে হলে আপনাকে সালাফদের মানহাজে চলতে হবে, সত্যিকারের ‘আলিমদের সাথে থাকতে হবে। এখানে নিজের মত ও বুঝ অনুযায়ী চলা অত্যন্ত ভয়ঙ্কর ও বিপজ্জনক। আল্লাহ্ আমাদেরকে হেফাজত করুন। আমীন। ঐ শুনুন, মহান আল্লাহর হুঁশিয়ারি- ‘‘আর সে বিষয়ের পেছনে ছুটো না (বোলো না, কোরো না, সাক্ষ্য দিয়ো না), যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই। নিশ্চয়ই কান, চোখ ও অন্তর- এগুলোর সকল বিষয়ে সে জিজ্ঞাসিত হবে।’’ [সূরাহ্ ইসরাঃ ৩৬] আল্লাহ্ আমাদেরকে ‘ইলমবিহীন কথা বলা থেকে হেফাজত করুন এবং সালাফী মানহাজ অনুযায়ী চলার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন, ইয়া রব্বাল ‘আলামীন। সুপথপ্রাপ্তির অভিলাষী এক গুনাহ্গার বান্দা- Md Abdullah Mridha. Rakibun Atid Jihaad ভাইয়া। রচনাকাল সকাল ১১ টা ৯ মিনিট। মঙ্গলবার।
৮ মে, ২০১৮ খ্রিস্টাব্দ।
২১ শা’বান, ১৪৩৯ হিজরী।
২৫ বৈশাখ, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ।

No comments

Theme images by konradlew. Powered by Blogger.