মুওয়াযানাত’ নামক একটি বিদ‘আতী মানহাজ এবং ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যার



মুওয়াযানাত’ নামক একটি বিদ‘আতী মানহাজ এবং ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যার


[বি.দ্র.: এই লেখাটি মূলত আমার একটি অপ্রকাশিত প্রবন্ধের দুটি অধ্যায় বা পরিচ্ছেদ। প্রাসঙ্গিকভাবে এখানে ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যারের আলোচনা এসেছে। জনসাধারণকে সতর্ক করার জন্যই অধ্যায় দুটি একত্রে পোস্ট করা হল। – সংকলক]

বিদ‘আতীদের ভালো কাজের প্রশংসা না করে শুধু দোষ বর্ণনা কেন?

কতিপয় বিদ‘আতী এবং বিদ‘আতীদের দ্বারা ধোঁকায় পতিত সালাফী এই অভিযোগ উত্থাপন করে যে, বিদ‘আতীদের এত এত ভালো গুণ থাকা সত্ত্বেও তা বর্ণনা না করে তোমরা শুধু সমালোচনা করছ! কারো সমালোচনা করতে হলে অবশ্যই তার ভালো গুণ উল্লেখ করতে হবে। বলতে হবে, তার এই এই ভালো গুণ আছে, কিন্তু তিনি এই কাজটি ভুল করেছেন!

আমি বলছি, সমালোচনা করার ক্ষেত্রে তাদের উল্লিখিত মানহাজ একটি নব উদ্ভাবিত বিদ‘আতী মানহাজ। এই মানহাজ ‘ইলমী পরিমণ্ডলে “মানহাজুল মুওয়াযানাত” তথা “সমতাবিধানের মানহাজ” নামে পরিচিত।

জারাহ ও তা‘দীলের ইমাম রাবী‘ আল-মাদখালী (হাফিযাহুল্লাহ) তাঁর “মানহাজু আহলিস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আহ ফী নাক্বদির রিজালি ওয়াল কুতুবি ওয়াত্ব ত্বাওয়াইফ” কিতাবে এই বিদ‘আতী মানহাজের কবর রচনা করেছেন। বিগত শতাব্দীর সর্বশ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ) শাইখ রাবী‘র বইটি শাইখ ‘আব্দুল ‘আযীয রাজিহীকে দিয়ে সম্পাদনা করে নিয়েছেন এবং শাইখ রাজিহীর মন্তব্য শোনার পর বইটির প্রশংসা করেছেন। [আন-নাসরুল ‘আযীয ‘আলার রাদ্দিল ওয়াজীয; পৃষ্ঠা: ২-৩; গৃহীত: মাজমূ‘উশ শাইখ রাবী‘; খণ্ড: ১০; পৃষ্ঠা: ১৭১-১৭২]

এছাড়াও ইমাম সালিহ আল-ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ) বইটির প্রশংসা করেছেন এবং বলেছেন, “তিনি রদ করার ক্ষেত্রে সালাফদের আদর্শ বর্ণনা করেছেন। তিনি বর্ণনা করেছেন যে, সালাফগণ পথভ্রষ্ট ব্যক্তিদের রদ করেছেন, তাদের প্রশংসা করেননি। কেননা তাঁরা যদি তাদের প্রশংসা করতেন, তবে এটা স্ববিরোধী বিষয়ে পরিণত হত।” [আল-আজউয়িবাতুল মুফীদাহ ‘আন আসইলাতিল মানাহিজিল জাদীদাহ; পৃষ্ঠা: ৬০]

অনুরূপভাবে প্রখ্যাত ফাক্বীহ আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ যাইদ বিন হাদী আল-মাদখালী (রাহিমাহুল্লাহ)-ও বইটির উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন। [আন-নাসরুল ‘আযীয ‘আলার রাদ্দিল ওয়াজীয; ৩৬-৪০; গৃহীত: মাজমূ‘উশ শাইখ রাবী‘; খণ্ড: ১০; পৃষ্ঠা: ১৯৭-১৯৯]

এছাড়াও ইমাম আলবানী, ইমাম ‘উসাইমীন, ইমাম মুক্ববিল, ইমাম আহমাদ আন-নাজমী, ইমাম লুহাইদান, ইমাম ‘আব্বাদ-সহ আরও অনেক ‘আলিম তাহযীর (ওয়ার্নিং) করার ক্ষেত্রে ব্যক্তির ভালো গুণ উল্লেখ করতে বলার বিদ‘আতী মানহাজকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। আমরা আলোচনা দীর্ঘ না করে, এখানে কয়েকজন ‘আলিমের বক্তব্য পেশ করব। তবে তার আগে সরাসরি কিতাব ও সুন্নাহ থেকে জানব যে, এই মানহাজ একটি নব উদ্ভাবিত বাত্বিল মানহাজ।

আল্লাহ তা‘আলা মহাগ্রন্থ আল-ক্বুরআনে বিভিন্ন শ্রেণির বিরুদ্ধবাদীর সমালোচনা করেছেন এবং তাদেরকে খণ্ডন করেছেন। অথচ তিনি তাদের প্রশংসা করেননি। যেমন: ইহুদি-খ্রিষ্টান, আরবের মুশরিক সম্প্রদায়, নাস্তিক সম্প্রদায়, ইবলীস, ফির‘আউন, আবূ লাহাব প্রমুখ। এটি একজন ক্বুরআনের পাঠকের কাছে সুবিদিত বিষয়। শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭২৮ হি.] বলেছেন,

«وفرعون أكثر الكفار ذكرًا في القرآن، وهو لا يذكره –سبحانه– إلا بالذم والتقبيح واللعن، ولم يذكره بخير قط».

“ক্বুরআনে কাফিরদের মধ্যে ফির‘আউনের কথাই সবচেয়ে বেশি আলোচনা করা হয়েছে। অথচ তিনি (আল্লাহু সুবহানাহ) তার ব্যাপারে স্রেফ নিন্দা, ভর্ৎসনা ও অভিসম্পাতের কথাই আলোচনা করেছেন। তিনি মোটেও তার কোন ভালো বিষয়ের কথা উল্লেখ করেননি।”
[জামি‘উর রাসাইল; খণ্ড: ১; পৃষ্ঠা: ২১১-২১২; গৃহীত: আবূ হাযিম মুহাম্মাদ বিন হুসনী আল-ক্বাহিরী, আল-আয়াতুল বাইয়্যিনাত ফী কাশফি হাক্বীক্বাতিল মুওয়াযানাতি বাইনাল হাসানাতি ওয়াস সাইয়্যিআত; পৃষ্ঠা: ১৫১; দারু সাবীলিল মু’মিনীন, কায়রো কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪৩৩ হি./২০১২ খ্রি. (২য় প্রকাশ); গ্রন্থটি সম্পাদনা করেছেন এবং এতে ভূমিকা লিখে দিয়েছেন ‘আল্লামাহ হাসান বিন ‘আব্দুল ওয়াহহাব আল-বান্না (হাফিযাহুল্লাহ)]

আল্লাহ যে কুরআনে  উল্লিখিত ব্যক্তি ও সম্প্রদায়ের সমালোচনা করেছেন, তার দলিল—

ইহুদি-খ্রিষ্টান = সূরাহ বাক্বারাহ: ৪৪, ১১৩, ১২০; সূরাহ মাইদাহ: ১৮, ৬৪, ৮২; সূরাহ তাওবাহ: ৩০।

মুশরিক = সূরাহ বাক্বারাহ: ২২১; সূরাহ আন‘আম: ১৪৮।

নাস্তিক = সূরাহ জাসিয়াহ: ২৪-২৬।

ইবলীস = সূরাহ বাক্বারাহ: ৩৪; সূরাহ হিজর: ৩১-৩৫; সূরাহ ইসরা: ৬১-৬৩; সূরাহ কাহাফ: ৫০; সূরাহ সাদ: ৭৪-৭৮।

ফির‘আউন = সূরাহ বাক্বারাহ: ৪৯; সূরাহ আলে ‘ইমরান: ১১; সূরাহ হূদ: ৯৭; সূরাহ ত্বহা: ২৪, ৪৩।

আবূ লাহাব = সূরাহ লাহাব।

·
অনুরূপভাবে রাসূল ﷺ অনেকের সমালোচনা করেছেন, কিন্তু সমালোচনার সময় সমালোচিত ব্যক্তির ভালো বিষয় উল্লেখ করেননি। রাসূল ﷺ এর এরকম কিছু বক্তব্য নিম্নরূপ—

১. তিনি ﷺ বলেছেন, مَنْ لِكَعْبِ بْنِ الْأَشْرَفِ فَإِنَّهُ قَدْ آذَى اللهَ وَرَسُوْلَهُ – “কা‘ব ইবনু আশরাফকে হত্যা করার জন্য কে প্রস্তুত আছ? সে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে কষ্ট দিয়েছে।” [সাহীহ বুখারী, হা/৪০৩৭; সাহীহ মুসলিম, হা/১৮০১]

২. তিনি ﷺ ইহুদি-খ্রিষ্টানদের ব্যাপারে বলেছেন, فَإِنَّ الْيَهُودَ مَغْضُوبٌ عَلَيْهِمْ وَإِنَّ النَّصَارَى ضُلاَّل – “নিশ্চয়ই ইহুদিরা অভিশপ্ত এবং খ্রিষ্টানরা পথভ্রষ্ট।” [তিরমিযী, হা/২৯৫৩; সনদ: হাসান]

৩. আবূ যার (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) জনৈক ব্যক্তিকে তার মায়ের ব্যাপারে লজ্জা দিলে, তিনি ﷺ বলেন, يَا أَبَا ذَرٍّ أَعَيَّرْتَهُ بِأُمِّهِ إِنَّكَ امْرُؤٌ فِيكَ جَاهِلِيَّةٌ – “আবূ যার! তুমি তাকে তার মা সম্পর্কে লজ্জা দিয়েছ? তুমি তো এমন ব্যক্তি, যার (তোমার) মধ্যে এখনো জাহিলী যুগের স্বভাব বিদ্যমান।” [সাহীহ বুখারী, হা/৩০; সাহীহ মুসলিম, হা/১৬৬১]

৪. একদা মু‘আয (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) সালাত দীর্ঘ করলে, তিনি ﷺ তাঁকে উদ্দেশ্য করে বলেন, فَتَّانٌ فَتَّانٌ فَتَّانٌ – “ফিতনাহ সৃষ্টিকারী, ফিতনাহ সৃষ্টিকারী, ফিতনাহ সৃষ্টিকারী!” [সাহীহ বুখারী, হা/৭০১; সাহীহ মুসলিম, হা/৪৬৫]

৫. তিনি ﷺ আবূ জাহম (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু)’র ব্যাপারে বলেছেন, أَمَّا أَبُو جَهْمٍ فَلاَ يَضَعُ عَصَاهُ عَنْ عَاتَقِهِ – “আবূ জাহম এমন লোক, যে তার কাঁধ থেকে লাঠি নামিয়ে রাখে না।” [সাহীহ মুসলিম, হা/১৪৮০; ‘ত্বালাক্ব’ অধ্যায়; পরিচ্ছেদ- ৬]

৬. তিনি ﷺ মু‘আউয়িয়াহ (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু)’র ব্যাপারে বলেছেন, وَأَمَّا مُعَاوِيَةُ فَصُعْلُوكٌ لاَ مَالَ لَهُ – “আর মু‘আউয়িয়াহ হল কপৰ্দকহীন গরীব মানুষ।” [প্রাগুক্ত]

৭. তিনি ﷺ দুজন ব্যক্তির ব্যাপারে বলেছেন, مَا أَظُنُّ فُلاَنًا وَفُلاَنًا يَعْرِفَانِ مِنْ دِينِنَا شَيْئًا – “অমুক ও অমুক ব্যক্তি আমাদের দ্বীনের ব্যাপারে কিছু জানে বলে আমি মনে করি না।” [সাহীহ বুখারী, হা/৬০৬৭]

৮. তিনি ﷺ জনৈক ব্যক্তিকে দেখে বলেছেন, بِئْسَ أَخُو الْعَشِيرَةِ، وَبِئْسَ ابْنُ الْعَشِيرَةِ ‏ – “সে সমাজের নিকৃষ্ট লোক এবং সমাজের দুষ্ট সন্তান।” [সাহীহ বুখারী, হা/৬০৩২; সাহীহ মুসলিম, হা/২৫৯১]

৯. হিন্দা বিনতে ‘উতবাহ (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা) আল্লাহ’র রাসূল ﷺ কে স্বীয় স্বামীর ব্যাপারে বলেন, ٌإِنَّ أَبَا سُفْيَانَ رَجُلٌ شَحِيْح – “নিশ্চয়ই আবূ সুফইয়ান একজন কৃপণ ব্যক্তি।” তিনি (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা) তাঁর স্বামীর কোন ভালো গুণ উল্লেখ করেননি। তথাপি নাবী ﷺ তাঁর এই কথার প্রতিবাদ করেননি। [সাহীহ বুখারী, হা/২২১১]

১০. হাসসান বিন সাবিত (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু) মুশরিকদের দোষত্রুটি বর্ণনা করে তাদের বিরুদ্ধে কবিতা রচনা করতেন। রাসূল ﷺ তাঁকে উদ্দেশ্য করে বলেন, اُهْجُهُمْ –أَوْ هَاجِهِمْ– وَجِبْرِيْلُ مَعَكَ – “তুমি তাদের দোষত্রুটি বর্ণনা কর (অথবা বলেছেন, তুমি তাদের বিরুদ্ধে ব্যঙ্গ-কবিতা রচনা কর)। তোমার সঙ্গে জিবরীল আছেন।” [সাহীহ বুখারী, হা/৩২১৩] উল্লেখ্য যে, তিনি ﷺ সাহাবী হাসসানকে মুশরিকদের ভালো গুণ বর্ণনা করতে বলেননি, স্রেফ দোষত্রুটি বর্ণনা করতে বলেছেন।

[এই দলিলগুলো সংগৃহীত হয়েছে আবূ হাযিম মুহাম্মাদ বিন হুসনী আল-ক্বাহিরী প্রণীত “আল-আয়াতুল বাইয়্যিনাত ফী কাশফি হাক্বীক্বাতিল মুওয়াযানাতি বাইনাল হাসানাতি ওয়াস সাইয়্যিআত” গ্রন্থ থেকে; পৃষ্ঠা: ১৫১-১৫২; দারু সাবীলিল মু’মিনীন, কায়রো কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪৩৩ হি./২০১২ খ্রি. (২য় প্রকাশ)]


বাংলাদেশের একজন সুপরিচিত দা‘ঈ হলেন ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যার (সাবেক সহযোগী অধ্যাপক, হাদীস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া)। স্যার (রাহিমাহুল্লাহ) তাঁর এক লেকচারে বলেছেন, “আল্লাহ ক্বুরআন কারীমে ইহুদিদের সমালোচনা করেছেন, খ্রিষ্টানদের সমালোচনা করেছেন, প্রশংসা-সহ। বলেছেন, ওদের অনেক ভালো আছে, এইটা খারাপ।... আপনার যদি সমালোচনা করার দরকার হয় –সবাইকে ভালো আমরা বলব না– আমরা যদি কারোর কোনোটা খারাপ লাগে, খুব সহজে বলতে পারি, অমুক ব্যক্তি আল্লাহ’র দ্বীনের অনেক কাজ করেন, আমরা মনে করি, তিনি আল্লাহ’র জন্য করছেন, কিন্তু তাঁর এই কাজটা এই কাজটা ভুল, আমরা আশা করি তিনি হিদায়াত হবেন।” (যদ্দৃষ্ট – সংকলক)
[আমাদের কাছে স্যারের বক্তব্যের একটি ছোট্ট ভিডিও ক্লিপ আছে। উদ্ধৃত অংশটুকু ওই ক্লিপের ১ মিনিট ২৬ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিট ৫৮ সেকেন্ড পর্যন্ত প্রদানকৃত বক্তব্য থেকে গৃহীত। পোস্ট সংলগ্ন ভিডিওটিই সেই ক্লিপ।]

এই নবআবিষ্কৃত মানহাজের স্বপক্ষে অনেকে ক্বুরআন-সুন্নাহ থেকে দলিল প্রদান করেন। কিন্তু তাঁদের ইস্তিদলাল (দলিল গ্রহণ) যে বাত্বিল, তা আমাদের কাছে ইতিমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। এক্ষণে আমরা এ ব্যাপারে তাদের উল্লিখিত যাবতীয় দলিল উল্লেখ করে তা খণ্ডন করতে চাচ্ছি না। আমরা শুধুমাত্র স্যার (রাহিমাহুল্লাহ) প্রদত্ত দলিলের খণ্ডন করব। আর আল্লাহই তাওফীক্বদাতা।

স্যার (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, “আল্লাহ ক্বুরআন কারীমে ইহুদিদের সমালোচনা করেছেন, খ্রিষ্টানদের সমালোচনা করেছেন, প্রশংসা-সহ। বলেছেন, ওদের অনেক ভালো আছে, এইটা খারাপ।” (যদ্দৃষ্ট)

আমি বলছি, স্যারের কথার স্বপক্ষে ক্বুরআনে একটি আয়াত রয়েছে (আপাতদৃষ্টিতে মনে হয় যে, আয়াতটি স্যারের বক্তব্যের স্বপক্ষে), যে আয়াতটি দিয়ে এই বিদ‘আতী মানহাজের ধারক ও বাহকরা দলিল পেশ করে থাকে। যেমনটি শাইখ রাবী‘ (হাফিযাহুল্লাহ)’র গ্রন্থে উল্লিখিত হয়েছে। সেই আয়াতটি হল—

﴿وَمِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ مَنْ إِنْ تَأْمَنْهُ بِقِنْطَارٍ يُؤَدِّهِ إِلَيْكَ وَمِنْهُمْ مَنْ إِنْ تَأْمَنْهُ بِدِينَارٍ لَا يُؤَدِّهِ إِلَيْكَ إِلَّا مَا دُمْتَ عَلَيْهِ قَائِمًا ۗ ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ قَالُوا لَيْسَ عَلَيْنَا فِي الْأُمِّيِّينَ سَبِيلٌ وَيَقُولُونَ عَلَى اللَّهِ الْكَذِبَ وَهُمْ يَعْلَمُونَ﴾.

“আর ইহুদি-খ্রিষ্টানদের মধ্যে এমন ব্যক্তি আছে, যদি তার নিকট তুমি অঢেল সম্পদ আমানত রাখ, তবুও সে তা তোমার নিকট আদায় করে দেবে এবং তাদের মধ্যে এমন ব্যক্তিও আছে, যদি তুমি তার নিকট একটি দিনার আমানত রাখ, তবে সর্বোচ্চ তাগাদা ছাড়া সে তা তোমাকে ফেরত দেবে না। এটি এ কারণে যে, তারা বলে, ‘নিরক্ষরদের ব্যাপারে আমাদের উপর কোন পাপ নেই’। আর তারা জেনেশুনে আল্লাহ’র প্রতি মিথ্যা বলে।” [সূরাহ আলে ‘ইমরান: ৭৫]

আমরা এই দলিলের খণ্ডনে যাওয়ার পূর্বেই একটি কথা স্পষ্ট করি। কথাটি হল—স্যার (রাহিমাহুল্লাহ) থেকে আমাদের উদ্ধৃত বক্তব্যের দ্বিতীয় বাক্যটি পুরোপুরি ভ্রান্ত এবং মিথ্যা কথা। আল্লাহ স্যারকে ক্ষমা করুন এবং তাঁর উপর রহম করুন। এটি হয়ত সাবক্বুল লিসান তথা স্লিপ অফ দ্য টাং। কিন্তু আমরা উম্মাহকে সতর্ক করার জন্য বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি। উদ্ধৃত বক্তব্যে স্যার (রাহিমাহুল্লাহ)’র দ্বিতীয় বাক্যটি হল—“বলেছেন, ওদের অনেক ভালো আছে, এইটা খারাপ।” (যদ্দৃষ্ট) স্যারের বাক্যের ভাবার্থ হচ্ছে—“আল্লাহ ইহুদি-খ্রিষ্টানদের ব্যাপারে বলেছেন, ‘ওদের অনেক ভালো আছে, তবে এটি খারাপ’।”

আমি বলছি, এটি আল্লাহ’র ব্যাপারে মিথ্যাচার। আল্লাহ ক্বুরআনের কোথাও বলেননি যে, ইহুদি-খ্রিষ্টানের অনেক ভালো আছে, তবে এটি খারাপ। কোথাও না।

এবার আসুন, সূরাহ আলে ‘ইমরানের আয়াত সম্পর্কে আলোচনা করি। কতিপয় লোক এই আয়াত থেকে দলিল গ্রহণ করে বলে থাকেন, কারো সমালোচনা করতে হলে অবশ্যই তার ভালো গুণ উল্লেখ করতে হবে। কারণ স্বয়ং আল্লাহ ইহুদি-খ্রিষ্টানের সমালোচনা করার সময় তাদের ভালো গুণ উল্লেখ করেছেন।

·

জারাহ ও তা‘দীলের ঝাণ্ডাবাহী মুজাহিদ, যুগশ্রেষ্ঠ নাক্বিদ (খণ্ডনকারী), আল-মুহাদ্দিসুল ফাক্বীহ ইমাম রাবী‘ বিন হাদী আল-মাদখালী (হাফিযাহুল্লাহ) তাদের উপস্থাপিত এই দলিলকে পাঁচ দিক থেকে খণ্ডন করেছেন। যথা:

প্রথম দিক: আমার জানামতে কোন সাহাবী বা সালাফদের কোন মুফাসসির এই কথা বলেননি যে, এই আয়াতটি ভালো ও মন্দের মধ্যে তুলনা করার মানহাজ তথা মানহাজুল মুওয়াযানাত প্রমাণ করে। আর সালাফদের বুঝ ও সমঝ থেকে বেরিয়ে যাওয়া বাঞ্ছনীয় নয়।

·
দ্বিতীয় দিক: এই আয়াত থেকে তাফসীরকারক বিদ্বানগণ এটা বুঝেছেন যে, এখানে আল্লাহ ইহুদি-খ্রিষ্টানদের থেকে সতর্ক করেছেন।

ইমাম ক্বুরত্বুবী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, أخبر تعالى أن في أهل الكتاب الخائن والأمين، والمؤمنون لا يميزون ذلك، فينبغي اجتناب جميعهم – “আল্লাহ তা‘আলা সংবাদ দিয়েছেন যে, ইহুদি-খ্রিষ্টানদের মধ্যে খেয়ানতকারীও আছে, আমানতদারও আছে। মু’মিনরা তা পার্থক্য করতে পারে না। তাই তাদের সবাইকে পরিহার করা বাঞ্ছনীয়।” [ইমাম ক্বুরত্বুবী (রাহিমাহুল্লাহ), আল-জামি‘উ লি আহকামিল ক্বুরআন; খণ্ড: ৪; পৃষ্ঠা: ১১৬]

ইমাম ইবনু কাসীর (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, يخبر تعالى عن اليهود، فإن منهم الخونة، ويحذر المؤمنين من الإغترار بهم – “আল্লাহ তা‘আলা ইহুদিদের ব্যাপারে সংবাদ দিয়েছেন যে, তাদের মধ্যে খেয়ানতকারী বা বিশ্বাসঘাতক আছে। আর তিনি মু’মিনদেরকে তাদের দ্বারা ধোঁকাগ্রস্ত হওয়া থেকে সতর্ক করেছেন।” [ইমাম ইবনু কাসীর (রাহিমাহুল্লাহ), তাফসীরুল ক্বুরআনিল ‘আযীম; খণ্ড: ২; পৃষ্ঠা: ৬০]

মূলত আয়াতে তাদের ভালো গুণ উল্লেখ করা হয়েছে একারণে যে, মু’মিনরা যেন তাদের ভালো গুণ দেখে প্রতারিত না হয়। আল্লাহু আ‘লাম।

·
তৃতীয় দিক: ক্বুরআন ও সুন্নাহ’য় অসংখ্য দলিল বিদ্যমান রয়েছে, যেখানে ইহুদি-খ্রিষ্টানদের স্রেফ নিন্দা করা হয়েছে, তাদের ভালো গুণ উল্লেখ করা হয়নি। যেমন:

১. আল্লাহ বানী ইসরাঈলদের ব্যাপারে বলেছেন, وَلَا تَلْبِسُوا الْحَقَّ بِالْبَاطِلِ وَتَكْتُمُوا الْحَقَّ وَأَنْتُمْ تَعْلَمُونَ – “আর তোমরা হক্বকে বাত্বিলের সাথে মিশ্রিত করো না এবং জেনে-বুঝে হক্বকে গোপন করো না।” [সূরাহ বাক্বারাহ: ৪২]

২. তিনি আরও বলেছেন, أَتَأْمُرُونَ النَّاسَ بِالْبِرِّ وَتَنْسَوْنَ أَنْفُسَكُمْ وَأَنْتُمْ تَتْلُونَ الْكِتَابَ ۚ أَفَلَا تَعْقِلُونَ – “তোমরা কি মানুষকে ভাল কাজের আদেশ দিচ্ছ আর নিজদেরকে ভুলে যাচ্ছ? অথচ তোমরা কিতাব তিলাওয়াত কর। তোমরা কি বুঝ না?” [সূরাহ বাক্বারাহ: ৪৪]

৩. তিনি অন্যত্র বলেছেন, وَإِذْ قَالَ مُوسَىٰ لِقَوْمِهِ يَا قَوْمِ إِنَّكُمْ ظَلَمْتُمْ أَنْفُسَكُمْ بِاتِّخَاذِكُمُ الْعِجْلَ فَتُوبُوا إِلَىٰ بَارِئِكُمْ فَاقْتُلُوا أَنْفُسَكُمْ ذَٰلِكُمْ خَيْرٌ لَكُمْ عِنْدَ بَارِئِكُمْ فَتَابَ عَلَيْكُمْ ۚ إِنَّهُ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ – “আর যখন মূসা তার কওমকে বলেছিল, ‘হে আমার কওম, নিশ্চয় তোমরা বাছুরকে (উপাস্যরূপে) গ্রহণ করে নিজদের উপর যুলম করেছ। সুতরাং তোমরা তোমাদের সৃষ্টিকর্তার কাছে তাওবা কর। অতঃপর তোমরা নিজদেরকে হত্যা কর। এটি তোমাদের জন্য তোমাদের সৃষ্টিকর্তার নিকট উত্তম। অতঃপর আল্লাহ তোমাদের তাওবা কবূল করলেন। নিশ্চয় তিনি তাওবা কবূলকারী, পরম দয়ালু।” [সূরাহ বাক্বারাহ: ৫৪]

৪. তিনি আরও বলেছেন, اتَّخَذُوا أَحْبَارَهُمْ وَرُهْبَانَهُمْ أَرْبَابًا مِنْ دُونِ اللَّهِ وَالْمَسِيحَ ابْنَ مَرْيَمَ وَمَا أُمِرُوا إِلَّا لِيَعْبُدُوا إِلَٰهًا وَاحِدًا ۖ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ۚ سُبْحَانَهُ عَمَّا يُشْرِكُونَ – “তারা আল্লাহকে ছেড়ে তাদের পণ্ডিত ও সংসার-বিরাগীদের রব হিসেবে গ্রহণ করেছে এবং মারইয়াম তনয় মাসীহকেও। অথচ তারা এক উপাস্যের ইবাদত করার জন্যই আদিষ্ট হয়েছে, তিনি ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই। তারা যে শরীক করে তিনি তা থেকে পবিত্র।” [সূরাহ তাওবাহ: ৩১]

৫. তিনি আরও বলেছেন, وَقَالَتِ الْيَهُودُ يَدُ اللَّهِ مَغْلُولَةٌ ۚ غُلَّتْ أَيْدِيهِمْ وَلُعِنُوا بِمَا قَالُوا ۘ بَلْ يَدَاهُ مَبْسُوطَتَانِ يُنْفِقُ كَيْفَ يَشَاءُ ۚ وَلَيَزِيدَنَّ كَثِيرًا مِنْهُمْ مَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَبِّكَ طُغْيَانًا وَكُفْرًا ۚ وَأَلْقَيْنَا بَيْنَهُمُ الْعَدَاوَةَ وَالْبَغْضَاءَ إِلَىٰ يَوْمِ الْقِيَامَةِ ۚ كُلَّمَا أَوْقَدُوا نَارًا لِلْحَرْبِ أَطْفَأَهَا اللَّهُ ۚ وَيَسْعَوْنَ فِي الْأَرْضِ فَسَادًا ۚ وَاللَّهُ لَا يُحِبُّ الْمُفْسِدِين – “আর ইহুদিরা বলে, ‘আল্লাহর হাত বন্ধ হয়ে গেছে’। তাদের হাতই বন্ধ হোক। আর তারা যা বলেছে, তার জন্য তারা অভিশপ্ত হোক। বরং তাঁর দুই হাত প্রসারিত। তিনি যেভাবে ইচ্ছা দান করেন। আর তোমার উপর তোমার রবের পক্ষ থেকে যা নাযিল করা হয়েছে তা তাদের অনেকের অবাধ্যতা ও কুফরী বাড়িয়েই দিচ্ছে। আর আমি তাদের মধ্যে কিয়ামতের দিন পর্যন্ত শত্রুতা ও ঘৃণা ঢেলে দিয়েছি। যখনই তারা যুদ্ধের আগুন প্রজ্বলিত করে, আল্লাহ তা নিভিয়ে দেন। আর তারা জমিনে ফাসাদ করে বেড়ায় এবং আল্লাহ ফাসাদকারীদের ভালবাসেন না।” [সূরাহ মাইদাহ: ৬৪]

৬. নাবী ﷺ বলেছেন, لَعْنَةُ اللهِ عَلَى الْيَهُوْدِ وَالنَّصَارَى اتَّخَذُوْا قُبُوْرَ أَنْبِيَائِهِمْ مَسَاجِد – “ইহুদি ও খ্রিষ্টানদের ওপর আল্লাহ’র অভিশাপ। তারা তাদের নাবীগণের কবরগুলোকে মাসজিদ বানিয়ে নিয়েছে।” [সাহীহ বুখারী, হা/৩৪৫৪]

৭. তিনি ﷺ আরও বলেছেন, لَعَنَ اللهُ الْيَهُوْدَ حُرِّمَتْ عَلَيْهِمْ الشُّحُومُ فَجَمَّلُوْهَا فَبَاعُوْهَا – “আল্লাহ ইহুদিদের ওপর অভিসম্পাত করুন। তাদের জন্য চর্বি হারাম করা হয়েছিল। অথচ তারা তা গলিয়ে বিক্রি করেছে।” [সাহীহ বুখারী, হা/৩৪৬০]

৮. তিনি ﷺ আরও বলেছেন, فَإِنَّ الْيَهُودَ مَغْضُوبٌ عَلَيْهِمْ وَإِنَّ النَّصَارَى ضُلاَّل – “নিশ্চয়ই ইহুদিরা অভিশপ্ত এবং খ্রিষ্টানরা পথভ্রষ্ট।” [তিরমিযী, হা/২৯৫৩; সনদ: হাসান]

·
চতুর্থ দিক: এই আয়াতটি তাদের দাবির বিপরীত বিষয় সাব্যস্ত করে। আয়াতে দুই শ্রেণির লোকের কথা বলা হয়েছে। এক শ্রেণি আমানতদার, অপর শ্রেণি খেয়ানতকারী বা বিশ্বাসঘাতক। এই আয়াত দ্বারা যদি তাদের দাবিকৃত মানহাজুল মুওয়াযানাতকে সাব্যস্ত করাই উদ্দিষ্ট হত, তাহলে অবশ্যই আয়াতে আমানতদার শ্রেণির খারাপ গুণগুলো এবং খেয়ানতকারী শ্রেণির ভালো গুণগুলো উল্লেখ করা হত। অথচ তা করা হয়নি। যেহেতু তারা (ইহুদি-খ্রিষ্টান) কাফির সম্প্রদায়। তাদের এমন ভয়াবহ খারাপ গুণ আছে, যা তাদের ভালো গুণগুলোকে আল্লাহ’র কাছে নিস্ফল ও পণ্ড করে দেয়।

·
পঞ্চম দিক: তাদের দাবিকৃত মূলনীতি অনুযায়ী যখনই কেউ ইহুদি-খ্রিষ্টানদের সমালোচনা করবে, তখন অবশ্যই তাদের ভালো গুণগুলো উল্লেখ করতে হবে। তাদের ভালো গুণগুলো উল্লেখ না করে তাদের সমালোচনা করা বৈধ নয়। অনুরূপভাবে পৌত্তলিক, নাস্তিক, কমিউনিস্ট, বিদ‘আতী, আবূ জাহল, আবূ লাহাব– এদের ভালো গুণ উল্লেখ করা ছাড়া তাদের দোষ বর্ণনা করা চলবে না। অথচ মহান আল্লাহ বলেছেন,

﴿تَبَّتْ يَدَا أَبِيْ لَهَبٍ وَّتَبَّ * مَا أَغْنى عَنْهُ مَالُهُ وَمَا كَسَبَ * سَيَصْلى نَاراً ذَاتَ لَهَبٍ * وَامْرَأَتُهُ حَمَّالَةَ الْحَطَبِ * فِيْ جِيْدِهَا حَبْلٌ مِّنْ مَّسَدٍ﴾.

“ধ্বংস হোক আবূ লাহাবের দুই হাত এবং ধ্বংস হোক সে নিজে। তার ধনসম্পদ ও উপর্জিত বস্তু তার কোন উপকারে আসবে না। সে প্রবেশ করবে লেলিহান শিখাবিশিষ্ট অগ্নিকুণ্ডে। আর তার স্ত্রীও, যে কাঠের বোঝা বহনকারিণী। ওর গলদেশে থাকবে খর্জুর আঁশের রশি।” [সূরাহ লাহাব]

এছাড়াও আল্লাহ অনেক কাফিরের সমালোচনা করেছেন। কিন্তু তাদের ভালো গুণ বর্ণনা করেননি।

[ইমাম রাবী‘ আল-মাদখালী (হাফিযাহুল্লাহ), মানহাজু আহলিস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আহ ফী নাক্বদির রিজালি ওয়াল কুতুবি ওয়াত্ব ত্বাওয়াইফ; ৫২-৫৮; ২য় প্রকাশ (তারিখ ও প্রকাশনার নাম বিহীন সফটকপি)]

·

“মানহাজুল মুওয়াযানাত” নামক বিদ‘আতী মানহাজের ব্যাপারে ‘আলিমদের বক্তব্যঃ

এই বিদ‘আতী মানহাজের ব্যাপারে অনেক ‘আলিমের বক্তব্য আছে। এখানে আহলুস সুন্নাহ’র কয়েকজন গ্রেট ‘আলিমের ১০ টি বক্তব্য উপস্থাপন করা হল।

·
১ম বক্তব্য:

বিগত শতাব্দীর সর্বশ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ শাইখুল ইসলাম ইমাম ‘আব্দুল ‘আযীয বিন ‘আব্দুল্লাহ বিন বায (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২০ হি./১৯৯৯ খ্রি.] কে প্রশ্ন করা হয়েছে,

«بالنسبة لمنهج أهل السنة فى نقد أهل البدع وكتبهم هل من الواجب ذكر محاسنهم ومساوئهم أم فقط مساوئهم؟»

“বিদ‘আতীদের এবং বিদ‘আতীদের বইপুস্তকের সমালোচনা করার ক্ষেত্রে আহলুস সুন্নাহ’র মানহাজ প্রসঙ্গে; তাদের ভালো-মন্দ উভয়ই কি বর্ণনা করা ওয়াজিব, নাকি স্রেফ তাদের মন্দ বর্ণনা করা ওয়াজিব?”

তিনি (রাহিমাহুল্লাহ) উত্তরে বলেছেন,

«المعروف في كلام أهل العلم نقد المساوىء للتحذير، وبيان الأخطاء التى أخطؤوا فيها للتحذير منها؛ أما الطيب معروف، مقبول الطيب، لكن المقصود التحذير من أخطائهم؛ الجهمية،
المعتزلة، الرافضة وما أشبه ذلك، فإذا دعت الحاجة إلى بيان ما عندهم من حق يبيَّن، وإذا سأل السائل: ما عندهم من الحق؟ ماذا وافقوا فيه أهل السنة؟ والمسؤول يعلم ذلك، يبين، لكن المقصود الأعظم والمهم بيان ما عندهم من الباطل، ليحذره السائل ولئلا يميل إليهم».

“(উম্মাহকে) সতর্ক করার জন্য মন্দের সমালোচনা করা এবং তারা (বিদ‘আতীরা) যেসব ভুলে পতিত হয়েছে সেসব ভুল থেকে সতর্ক করার জন্য সেগুলো বর্ণনা করার বিষয়টি ‘আলিমদের কথাবার্তায় সুপরিচিত। পক্ষান্তরে তাদের যা ভালো আছে, তা ভালো এবং ভালো বিষয় কবুলযোগ্য। কিন্তু প্রকৃত উদ্দেশ্য হল তাদের ভুল থেকে সতর্ক করা। যেমন: জাহমিয়্যাহ, মু‘তাযিলাহ, রাফিদ্বাহ প্রমুখ।

তাদের নিকটে যে হক্ব আছে, তা যখন বর্ণনা করার প্রয়োজন দেখা দেয়, তখন তা বর্ণনা করা হবে। যদি কোন প্রশ্নকারী প্রশ্ন করে যে, তাদের নিকট কী হক্ব রয়েছে? তারা কোন বিষয়ে আহলুস সুন্নাহ’র সাথে একমত হয়েছে? আর প্রশ্নকৃত ব্যক্তি এ ব্যাপারে জানে। তখন সে (প্রশ্নকৃত ব্যক্তি) তা বর্ণনা করবে। কিন্তু সবচেয়ে বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হচ্ছে তাদের নিকটে যে বাত্বিল আছে, তা বর্ণনা করা, যাতে করে প্রশ্নকারী তা থেকে সতর্ক থাকে পারে এবং তাদের দিকে ঝুঁকে না পড়ে।”

তাঁকে আবার জিজ্ঞেস করা হয়,

«فيه أناس يوجبون الموازنة: أنك إذا انتقدت مبتدعا ببدعته لتحذر الناس منه يجب أن تذكر حسناته حتى لا تظلمه؟»

“কতিপয় ব্যক্তি মুওয়াযানাতকে ওয়াজিব গণ্য করছে। অর্থাৎ, আপনি যখন কোন বিদ‘আতীকে তার বিদ‘আতের কারণে সমালোচনা করবেন এবং তার থেকে মানুষকে সতর্ক করবেন, তখন আপনার জন্য ওই বিদ‘আতীর ভালো গুণগুলো বর্ণনা করা ওয়াজিব, যাতে করে আপনি তার উপর জুলুম না করেন।”

তিনি (রাহিমাহুল্লাহ) উত্তর দিয়েছেন,

«لا، ما هو بلازم، ما هو بلازم، ولهذا إذا قرأت كتب أهل السنة وجدت المراد التحذير، اقرأ فى كتب البخارى ((خلق أفعال العباد))، فى كتاب الأدب فى ((الصحيح))، كتاب ((السنة)) لعبد الله ابن أحمد، كتاب ((التوحيد)) لابن خزيمة 
((رد عثمان بن سعيد الدارمى على أهل البدع)) إلى غير ذلك، يوردونه للتحذير من باطلهم، ما هو المقصود تعديد محاسنهم، المقصود التحذير من باطلهم، ومحاسنهم لاقيمة لها بالنسبة لمن كفر، إذا كانت بدعته تكفره بطلت حسناته، وإذا كانت لا تكفره فهو على خطر، فالمقصود هو بيان الأخطاء والأغلاط التى يجب الحذر منها».

“না, এটি আবশ্যক নয়, এটি আবশ্যক নয়। একারণে তুমি যখন আহলুস সুন্নাহ’র বইপুস্তক পড়বে, তখন তুমি দেখবে যে, মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সতর্ক করা। তুমি আল-বুখারীর গ্রন্থসমূহ পড়, “খলক্বু আফ‘আলিল ‘ইবাদ”, “আস-সাহীহ” গ্রন্থের শিষ্টাচার অধ্যায়, ‘আব্দুল্লাহ বিন আহমাদের “আস-সুন্নাহ” গ্রন্থ, ইবনু খুযাইমাহ’র “আত-তাওহীদ” গ্রন্থ, “রাদ্দু ‘উসমান ইবনি সা‘ঈদ আদ-দারিমী ‘আলা আহলিল বিদা‘ (‘উসমান বিন সা‘ঈদ আদ-দারিমী কর্তৃক বিদ‘আতীদের রদ)” প্রভৃতি। তাঁরা এগুলো উপস্থাপন করেছেন বিদ‘আতীদের বাত্বিল কর্মকাণ্ড থেকে (উম্মাহকে) সতর্ক করার জন্য। এগুলোর উদ্দেশ্য তাদের ভালো কাজ গণনা করা নয়। প্রকৃত উদ্দেশ্য হচ্ছে তাদের বাত্বিল বিষয় থেকে সতর্ক করা। তাদের ভালো গুণের কোন মূল্য নেই, যখন তাদের কেউ কাফির হয়ে যায়। যখন তার বিদ‘আত তাকে কাফির বানিয়ে দেয়, তখন তার যাবতীয় ভালো ও পূন্যকর্ম পণ্ড হয়ে যায়। আর যখন তার বিদ‘আত তাকে কাফির করে না, তখনও সে আশঙ্কার উপর থাকে। সুতরাং প্রকৃত উদ্দেশ্য হচ্ছে ভুলত্রুটি বর্ণনা করা, যেসব ভুলত্রুটি থেকে সতর্ক থাকা ওয়াজিব।”
[শাইখের কথা ১৪১৩ হিজরীর গ্রীষ্মে ত্বাইফে ফজর সালাতের পর তাঁর একটি দারসের রেকর্ডকৃত অডিও ক্লিপ থেকে সংগৃহীত; গৃহীত: মানহাজু আহলিস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আহ ফী নাক্বদির রিজালি ওয়াল কুতুবি ওয়াত্ব ত্বাওয়াইফ; পৃষ্ঠা: ৬-৭; ২য় প্রকাশ (তারিখ ও প্রকাশনার নাম বিহীন সফটকপি]

·
২য় বক্তব্য:

ইমাম ‘আব্দুল ‘আযীয বিন ‘আব্দুল্লাহ বিন বায (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২০ হি./১৯৯৯ খ্রি.] প্রদত্ত ফাতওয়া—

السؤال:
«أثابكم الله، هل الموازنات بين الحسنات والسيئات في الحكم على الأفراد والكتب والجماعات منهج صحيح؟ أم لا بد من ذكر السيئات فقط وإظهارها والتحذير من صاحبها؟»
الجواب:
«من أظهر المنكر أو البدعة يحذَّر منه، ولا ينظر إلى حسناته، الحسنات بينه وبين ربه، من أظهر المنكر أو البدعة يحذَّر منه ويُنصَح حتى يهتدي، هكذا جائت السنة».

প্রশ্ন: “আল্লাহ আপনাকে পুরস্কৃত করুন। বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ, বইপুস্তক ও দলসমূহের ব্যাপারে বিধান দেওয়ার ক্ষেত্রে ভালো ও মন্দের মধ্যে তুলনা করা কি সঠিক মানহাজ? নাকি স্রেফ মন্দ বিষয় বর্ণনা ও প্রকাশ করা এবং ওই মন্দ বিষয়ের বাহক থেকে সতর্ক করা আবশ্যক?”

উত্তর: “যে ব্যক্তি মন্দ ও বিদ‘আত জাহির করে, তার থেকে সতর্ক করতে হবে। তার ভালো গুণের দিকে ভ্রুক্ষেপ করা হবে না। তার ভালো গুণগুলো তার নিজের এবং তার রবের মধ্যকার ব্যাপার। সুতরাং যে ব্যক্তি মন্দ ও বিদ‘আত জাহির করবে, তার থেকে সতর্ক করতে হবে এবং তাকে নসিহত করতে হবে, যাতে করে সে সুপথপ্রাপ্ত হয়। এভাবেই সুন্নাহ বর্ণিত হয়েছে।”
[দ্র.: www.sahab.net/forums/index.php… (টেক্সট-সহ অডিও ক্লিপ)]

·
৩য় বক্তব্য:

বিগত শতাব্দীর সর্বশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ আল-ফাক্বীহুল মুজাদ্দিদ ইমাম মুহাম্মাদ নাসিরুদ্দীন আল-আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২০ হি./১৯৯৯ খ্রি.] এই মানহাজকে “বিদ‘আতীদের ত্বরীক্বাহ” আখ্যা দিয়ে বলেছেন,

«من أين لهم أن الإنسان إذا جاءت مناسبة لبيان خطأ مسلم، إن كان داعية أو غير داعية، لازم ما يعمل محاضرة ويذكر محاسنه من أولها الى اَخرها؛ الله اكبر، شىء عجيب! والله شىء عجيب!»

“কোত্থেকে তারা এই বিষয় আমদানি করেছে যে, যখন কোন মুসলিমের ভুল বর্ণনা করার প্রসঙ্গ আসবে, চাই সে মুসলিম দা‘ঈ (আহ্বানকারী) হোক বা না হোক, তখন অবশ্যই একটি বক্তব্য দিতে হবে, যে বক্তব্যে তার ভালো বিষয়গুলো শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বর্ণনা করতে হবে? আল্লাহু আকবার! এটি বড়ই আশ্চর্যের বিষয়! আল্লাহ’র কসম, এটি বড়ই আশ্চর্যের বিষয়!”
[ইমাম আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ), সিলসিলাতুল হুদা ওয়ান নূর; ৮৫৫ নং অডিও ক্লিপ; গৃহীত: মানহাজু আহলিস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আহ ফী নাক্বদির রিজালি ওয়াল কুতুবি ওয়াত্ব ত্বাওয়াইফ; পৃষ্ঠা: ৯; ২য় প্রকাশ (তারিখ ও প্রকাশনার নাম বিহীন সফটকপি]

·
৪র্থ বক্তব্য:

বিগত শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ মুফাসসির, মুহাদ্দিস, ফাক্বীহ ও উসূলবিদ আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২১ হি./২০০১ খ্রি.] বলেছেন,

«عندما نريد أن نقوم الشخص فيجب أن نذكر المحاسن والمساوىء، لأن هذا هو الميزان العدل، وعندما نحذر من خطأ شخص فنذكر الخطأ فقط؛ لأن المقام مقام تحذير، ومقام التحذير ليس من الحكمة فيه أن نذكر المحاسن، لأنك إذا ذكرت المحاسن فإن السامع سيبقى متذبذبًا، فلكل مقام مقال».

“যখন আমরা কোন ব্যক্তির (জীবনী) মূল্যায়ন করতে চাইব, তখন তার ভালো-মন্দ সকল বিষয় বর্ণনা করা ওয়াজিব হয়ে যাবে। কেননা এটাই নায্য মানদণ্ড। আর যখন আমরা কোন ব্যক্তির ভুল থেকে সতর্ক করব, তখন আমরা স্রেফ ভুলটাই উল্লেখ করব। কেননা এটি সতর্কীকরণের প্রসঙ্গ। আর এটা প্রজ্ঞাপূর্ণ নয় যে, আমরা সতর্কীকরণের প্রসঙ্গে ব্যক্তির ভালো বিষয়গুলো বর্ণনা করব। কেননা তুমি যখন ভালো বিষয়গুলো বর্ণনা করবে, তখন অবশ্যই শ্রোতা দোদুল্যমান অবস্থায় পতিত হবে। বস্তুত প্রত্যেক প্রসঙ্গের জন্য স্বতন্ত্র বক্তব্য রয়েছে।”
[ইমাম ‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ), লিক্বাউল বাবিল মাফতূহ; লিক্বা (সাক্ষাৎকার) নং: ৬৭; গৃহীত: আবূ হাযিম মুহাম্মাদ বিন হুসনী আল-ক্বাহিরী, আল-আয়াতুল বাইয়্যিনাত ফী কাশফি হাক্বীক্বাতিল মুওয়াযানাতি বাইনাল হাসানাতি ওয়াস সাইয়্যিআত; পৃষ্ঠা: ১৫৫-১৫৬; দারু সাবীলিল মু’মিনীন, কায়রো কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪৩৩ হি./২০১২ খ্রি. (২য় প্রকাশ)]

·
৫ম বক্তব্য:

ইয়েমেনের প্রখ্যাত মুহাদ্দিস আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ ইমাম মুক্ববিল বিন হাদী আল-ওয়াদি‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২২ হি./২০০১ খ্রি.] প্রদত্ত ফাতওয়া—

السؤال:
«ماذا يقصد بمنهج الموازنة بين الحسنات والسيئات ومن أول من قام به وما الهدف منه؟»
الجواب:
«القوم يعرفون أنهم مجروحون فهم يريدون أن يستروا على أنفسهم، وأقول: المبتدع الضال لا تذكر حسناته ولا كرامة، وهكذا الكافر. أما المحب للخير ولكنه أخطأ في بعض الأشياء فلا بأس أن تذكر بعض حسناته مثل أبان بن أبي عياش إذ قال بعض معاصريه: إنه إذا حدث أتى بأمر عظيم. وله من الفضل والعبادة، فسئل بعض معاصريه فقال: اذكر ما فيه من الخير، وحذر عنه أن يقبل حديثه».

প্রশ্ন: “ভালো ও মন্দের মধ্যে তুলনা করার মানহাজ (মানহাজুল মুওয়াযানাত) দ্বারা কী উদ্দেশ্য করা হয়? সর্বপ্রথম এই মানহাজ কে প্রতিষ্ঠা করে? আর এর উদ্দেশ্য কী?”

উত্তর: “এমন একটি সম্প্রদায়, যারা জানে যে, তাদেরকে জারাহ করা হয়েছে, ফলে তারা নিজেদেরকে গোপন করতে চায়। আমি বলছি, পথভ্রষ্ট বিদ‘আতীদের ভালো বিষয় উল্লেখ করা হবে না। কখনও নয়। অনুরূপভাবে কাফিরের ক্ষেত্রেও। পক্ষান্তরে কল্যাণকামী ব্যক্তি, যে কিছু বিষয়ে ভুল করেছে, তার কিছু ভালো বিষয় বর্ণনা করায় কোন সমস্যা নেই। যেমন: আবান বিন আবূ ‘আইয়্যাশ। তাঁর সমসাময়িকদের মধ্য থেকে একজন বলেছেন, ‘তিনি যখন হাদীস বর্ণনা করেন, তখন ভয়াবহ বিষয় আনয়ন করেন, যদিও তাঁর মর্যাদা ও ইবাদতমূলক কাজ রয়েছে’। তাঁর সমসাময়িক এক ব্যক্তিকে (তাঁর ব্যাপারে) জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘তার মধ্যে যে কল্যাণ আছে, তা উল্লেখ করো এবং তাঁর নিকট থেকে হাদীস গ্রহণ করা থেকে (লোকদের) সতর্ক করো’।”
[ইমাম মুক্ববিল আল-ওয়াদি‘ঈ (রাহিমাহুল্লাহ), তুহফাতুল মুজীব ‘আলা আসইলাতিল হাদ্বিরি ওয়াল গারীব; পৃষ্ঠা: ১৬৬; দারুল আসার, সানা (ইয়েমেন) কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪২৩ হি./২০০২ খ্রি. (২য় প্রকাশ)]

·
৬ষ্ঠ বক্তব্য:

দক্ষিণ সৌদি আরবের গ্রেট মুফতী আল-ফাক্বীহুল মুহাদ্দিছ আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ ইমাম আহমাদ বিন ইয়াহইয়া আন-নাজমী (রহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২৯ হি./২০০৮ খ্রি.] প্রদত্ত ফাতওয়া—

السؤال:
«هل من منهج السلف الموازنة بين الحسنات والسيئات في مقام النصيحة أم لا؟»
الجواب:
«هذا ليس من منهج السلف، ولم يقل به أحد إلا في زماننا هذا؛ قال به الإخوانيون، وأتباع الإخوانيين؛ قالوا: لا بد من الموازنة بين الحسنات والسيئات.
وهذا باطل، ليس له أساس من الحق، ولا أساس من الكتاب، ولا أساس من السنة، ولم يعمد به أحد من أصحاب رسول الله ﷺ، ولا من السلف الصالحين.
والنبي ﷺ كما هو معروف لما استشارته فاطمة بنت قيس تكلم في معاوية وأبي جهم وقال: ((أما معاوية فصلعوك لا مال له، وأما أبو جهم فضراب للنساء))، ولم يذكر من حسناتهم شيئًا، وهكذا إذا أردنا استعراض هذه الأدلة نجدها موجودة في كتاب جمعه فضيلة الشيخ السلفي ربيع بن هادي المدخلي حفظه الله والرد على القائلين بهذا المنهج».

প্রশ্ন: “নসিহতের ক্ষেত্রে ভালো ও মন্দের মধ্যে তুলনা করা (আল-মুওয়াযানাত) কি সালাফদের মানহাজের অন্তর্ভুক্ত, নাকি অন্তর্ভুক্ত নয়?”

উত্তর: “এটি সালাফদের মানহাজের অন্তর্ভুক্ত নয়। আমাদের যুগ ছাড়া ইতিপূর্বে কেউ এই কথা বলেনি। ইখওয়ানীরা এবং ইখওয়ানীদের অনুসারীরা এই বিষয়টির কথা বলে থাকে। তারা বলে, অবশ্যই ভালো বিষয় ও মন্দ বিষয়ের মধ্যে সমতাবিধান করতে হবে।

এটি বাত্বিল। এর কোন হক্ব ভিত্তি নেই। কিতাব এবং সুন্নাহ’য় এর কোন ভিত্তি নেই। রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সাহাবীবর্গ এবং ন্যায়নিষ্ঠ সালাফদের কেউই এই নব্য মানহাজকে আমলে বাস্তবায়িত করেননি।

এটি একটি সুপ্রসিদ্ধ ঘটনা যে, নাবী ﷺ এর কাছে যখন ফাত্বিমাহ বিনতে ক্বাইস (স্বীয় বিবাহের ব্যাপারে) পরামর্শ চেয়েছিলেন, তখন তিনি ﷺ মু‘আউয়িয়াহ এবং আবূ জাহম (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহুমা)’র সমালোচনা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “মু‘আউয়িয়াহ হল কপর্দকহীন গরীব মানুষ, আর আবূ জাহম স্ত্রীদের প্রচণ্ড প্রহার করে।” [সাহীহ মুসলিম, হা/১৪৮০; ‘ত্বালাক্ব’ অধ্যায়; পরিচ্ছেদ- ৬] তিনি তাদের কোন ভালো গুণ উল্লেখ করেননি। অনুরূপভাবে আমরা এই দলিলগুলো প্রদর্শন করতে চাইলে দেখব যে, এগুলো একটি গ্রন্থে বিদ্যমান রয়েছে, যে গ্রন্থটি সংকলন করেছেন সম্মানিত সালাফী শাইখ রাবী‘ বিন হাদী আল-মাদখালী (হাফিযাহুল্লাহ) এবং এগুলো বিদ্যমান রয়েছে এই নব্য মানহাজের মত পোষণকারীদের রিফিউটেশনের মধ্যে।”
[ইমাম আহমাদ আন-নাজমী (রাহিমাহুল্লাহ), আল-ফাতাওয়া আল-জালিয়্যাহ ‘আনিল মানাহিজিদ দা‘আউয়িয়্যাহ; খণ্ড: ১; পৃষ্ঠা: ৭৮-৭৯; তাহক্বীক্ব: শাইখ হাসান আদ-দাগরীরী; দারুল মিনহাজ কর্তৃক প্রকাশিত; সন-তারিখ বিহীন সফটকপি]


৭ম বক্তব্য:

সৌদি ফাতাওয়া বোর্ডের এবং সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদের প্রবীণ সদস্য যুগশ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ সামাহাতুল ওয়ালিদ আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ ইমাম সালিহ বিন ফাওযান আল-ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৫৪ হি./১৯৩৫ খ্রি.] প্রদত্ত ফাতওয়া—

السؤال:
«هل يلزمنا ذكر محاسن من نحذر منهم؟»
الجواب:
«إذا ذكرت محاسنهم فمعناه أنك دعوت لاتباعهم، لا، لا تذكر محاسنهم، اذكر الخطأ الذى هم عليه فقط؛ لأنه ليس موكولا إليك أن تزكي وضعهم، أنت موكول إليك بيان الخطأ الذى عندهم من أجل أن يتوبوا منه، ومن أجل أن يحذره غيرهم، الخطأ الذي هم عليه ربما يذهب بحسناتههم كلها إن كان كفرًا أو شركًا، وربما يرجح على حسناتهم، وربما تكون حسنات في نظرك، وليست حسنات عند الله».

প্রশ্ন: “আমরা যাদের থেকে সতর্ক করব, তাদের ভালো বিষয়গুলো বর্ণনা করা কি আমাদের জন্য আবশ্যক?”

উত্তর: “তুমি যখন তাদের ভালো বিষয়গুলো বর্ণনা করবে, তখন এর অর্থ হবে, তুমি তাদের অনুসরণ করার জন্য (মানুষকে) আহ্বান করছ। না, তুমি তাদের ভালো বিষয়গুলো উল্লেখ করো না। তুমি ভুলের কথা বর্ণনা কর, যে ভুলের উপর তারা রয়েছে। তোমার এটা দায়িত্ব নয় যে, তুমি তাদের অবস্থানের প্রশংসা করবে। তোমার দায়িত্ব হল—তাদের ভুল বর্ণনা করা, যাতে করে তারা তা থেকে ফিরে আসে এবং অন্যরা সে ভুলের ব্যাপারে সতর্ক হয়। তারা যে ভুলের উপর আছে, কখনও তা তাদের সকল পূন্য বিনষ্ট করে দেয়, যদি সে ভুল কুফর বা শির্ক হয়ে থাকে। কখনও সে ভুল তাদের পূন্যসমূহের উপর বিজয়ী হয়। আবার কখনও তা তোমার দৃষ্টিতে পূন্য বা ভালো বিবেচিত হয়, অথচ তা আল্লাহ’র নিকট ভালো নয়।”
[ইমাম সালিহ আল-ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ), আল আজউয়িবাতুল মুফীদাহ ‘আন আসইলাতিল মানাহিজিল জাদীদাহ; পৃষ্ঠা: ৩১-৩২; দারুল মিনহাজ, কায়রো কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪২৪ হিজরী (৩য় প্রকাশ)]

·
৮ম বক্তব্য:

সৌদি আরবের সাবেক প্রধান বিচারপতি এবং সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদের প্রবীণ সদস্য আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ ইমাম সালিহ বিন মুহাম্মাদ আল-লুহাইদান (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৫০ হি.] প্রদত্ত ফাতওয়া—

السؤال:
«هل من منهج أهل السنة والجماعة فى التحذير من أهل البدع والضلال ذكر محاسنهم المبتدعة والثناء عليهم وتمجيدهم بدعوى الإنصاف والعدل؟»
الجواب:
«وهل كانت قريش فى الجاهلية وأئمة الشرك، لا حسنة لأحدهم؟!
هل جاء فى القران ذكر حسنة من حسناتهم؟!
هل جاء فى السنة ذكر مكرمة من مكارمهم؟!
وكانوا يكرمون الضيف، كان العرب فى الجاهلية يكرمون الضيف، ويحفظون الجوار، ومع ذلك لم تذكر فضائل من عصى الله جل وعلا ليست المسألة مسألة تعداد المحاسن والمساوىء وإنما مسألة تحذير من خطر.
وإذا أراد الإنسان ان ينظر، فلينظر إلى أقوال الأئمة كأحمد ابن حنبل ويحيى بن معين وعلى بن المدينى وشعبة.
هل كان أحدهم إذا سئل عن شخض مجروح وقال :كذاب، هل قال: ولكنه كريم الأخلاق، وجواد فى بذل المال، كثير التهجد فى الليل؟!
وإذا قالوا مختلط، أو قالوا :أخذته الغفلة، هل كانوا يقولون: ولكن فيه ..ولكن فيه ..؟ إلا لماذا يُطلب من الناس فى هذا الزمن، إذا حذر شخص أن يقال: ولكنه كان فيه .. وكان فيه ..وكان فيه؟!! 
هذه دعايات من يجهل قواعد الجرح والتعديل، ويجهل أسباب تحقيق المصلحة، والتنفير من ضياعها».

প্রশ্ন: “সম্মানিত শাইখ, পথভ্রষ্ট ও বিদ‘আতীদের থেকে সতর্ক করার ক্ষেত্রে ন্যায় ও ইনসাফ দাবি অনুযায়ী বিদ‘আতীদের ভালো বিষয় বর্ণনা করা এবং তাদের প্রশংসা ও গুণকীর্তন করা কি আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের মানহাজের অন্তর্ভুক্ত?”

উত্তর: “জাহিলী যুগের ক্বুরাইশ সম্প্রদায় এবং মুশরিক নেতৃবর্গের কারও কি ভালো বিষয় ছিল না?! তথাপি ক্বুরআনে কি তাদের একটি ভালো গুণের কথাও বর্ণনা করা হয়েছে?! তথাপি সুন্নাহ’য় কি তাদের একটি মহৎ গুণের কথাও বর্ণনা করা হয়েছে?!

তারা মেহমানকে সম্মান করত। জাহিলী আরবরা মেহমানকে সম্মান করত, আশ্রিত ব্যক্তিকে হেফাজত করত। এতৎসত্ত্বেও মহান আল্লাহ’র বিরুদ্ধাচারণকারী ব্যক্তিদের ভালো গুণ উল্লিখিত হয়নি। এটি ভালো ও মন্দ গণনা করার বিষয় নয়। এটি বিপজ্জনক বিষয় থেকে সতর্কীকরণের বিষয়।

কেউ যদি বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করতে চায়, সে যেন ইমামগণের বক্তব্যের দিকে দৃষ্টি দেয়। যেমন: আহমাদ বিন হাম্বাল, ইয়াহইয়া বিন মা‘ঈন, ‘আলী ইবনুল মাদীনী, শু‘বাহ প্রমুখ।

তাঁদের কাউকে যখন কোন জারাহকৃত (দোষী) ব্যক্তির ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হত, তখন তিনি বলতেন, সে মিথ্যুক। তিনি কি বলতেন, কিন্তু সে সচ্চরিত, দানবীর, তাহাজ্জুদগুজার?!

তাঁরা যখন বলেছেন, সে বিশৃঙ্খল (বা এলোমেলো), বা তার গাফিলতি আছে, তখন কি তাঁরা বলেছেন যে, কিন্তু তার মধ্যে এই গুণ আছে, কিন্তু তার মধ্যে ওই আছে, কিন্তু তার মধ্যে এরূপ গুণ আছে?! তাহলে কেন এই যুগে মানুষের কাছে এটা তলব করা হবে যে, কেউ যখন কোন ব্যক্তি থেকে সতর্ক করবে, তখন বলতে হবে, কিন্তু তার মধ্যে এই গুণ আছে, তার মধ্যে ওই গুণ আছে, তার মধ্যে এরূপ গুণ আছে?!

মূলত এগুলো তাদের দাবি, যারা জারাহ ও তা‘দীলের (কারও ভালো ও খারাপ বর্ণনা করার একটি মূলনীতি শাস্ত্র) মূলনীতি সম্পর্কে অজ্ঞ এবং যারা কল্যাণ বাস্তবায়িত হওয়ার, আর কল্যাণকে বিনষ্টকারী বিষয়কে দূরীভূত করার মাধ্যম সম্পর্কে অজ্ঞ।”
[“সালামাতুল মানহাজি দালীলুল ফালাহ”– শীর্ষক অডিও ক্লিপ থেকে সংগৃহীত; গৃহীত: ইমাম রাবী‘ আল-মাদখালী (হাফিযাহুল্লাহ), আন-নাসরুল ‘আযীয ‘আলার রাদ্দিল ওয়াজীয; পৃষ্ঠা: ১৮-১৯; মাজমূ‘উশ শাইখ রাবী‘; খণ্ড: ১০; পৃষ্ঠা: ১৮২]

·
৯ম বক্তব্য:

বর্তমান যুগে জারাহ ওয়াত তা‘দীলের ঝাণ্ডাবাহী মুজাহিদ আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ আল-মুহাদ্দিস ইমাম রাবী‘ বিন হাদী বিন ‘উমাইর আল-মাদখালী (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৫১ হি./১৯৩২ খ্রি.] কে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন—

«وهذه القضية، قد كتبت فيها -ولله الحمد- كتابين: كتاب ((منهج أهل السنة والجماعة في نقد الرجال والكتب والطوائف)) وكتاب ((المحجة البيضاء في حماية السنة الغراء عن زيغ أهل الأهواء وزلات أهل الأخطاء)).
وأردفت الكتابين بإجابات كثيرة على شبه وافتراءات عبد الخالق، في كتابي ((النصر العزيز على الرد الوجيز)).
وأجبنا على أسئلة كثيرة في هذا الباب، فأحيل القراء أولا إلى هذه الكتب التي ذكرتها ليعرفوا الأدلة والأصول التي قام عليها المنهج السلفي وتدل على بطلان هذا المنهج المبتدع الضال الذي أعتبره من أخبث البدع وأفجرها وأخطرها، وأن هذا المنهج لو أخذوا به فعلا لهدموا القرآن والسنة والعلوم الشرعية كلها، بل العلوم البشرية كلها، والعياذ بالله».

“আল-হামদুলিল্লাহ, আমি এই বিষয়ে দুটি বই লিখেছি। একটি বই হল—“মানহাজু আহলিস সুন্নাতি ওয়াল জামা‘আহ ফী নাক্বদির রিজালি ওয়াল কুতুবি ওয়াত্ব ত্বাওয়াইফ”। আরেকটি বই: “আল-মাহাজ্জাতুল বাইদ্বা ফী হিমায়াতিস সুন্নাতিল গার্রা মিন যাইগি আহলিল আহওয়াঈ ওয়া যাল্লাতি আহলিল আখত্বা”। এই বই দুটির পশ্চাতে আমি (‘আব্দুর রহমান) ‘আব্দুল খালিক্বের বিভিন্ন সংশয় ও মিথ্যাচারের জবাব যোগ করেছি, আমার লেখা “আন-নাসরুল ‘আযীয ‘আলার রাদ্দিল ওয়াজীয” গ্রন্থে।

আমরা এই বিষয়ে অনেক প্রশ্নের জবাব দিয়েছি। প্রথমে আমি পাঠকদেরকে এই বইগুলোর দিকে ফিরে যেতে বলব, যে বইগুলোর কথা আমি উল্লেখ করেছি। যাতে করে পাঠকগণ বিভিন্ন দলিল ও মূলনীতি সম্পর্কে জানতে পারেন, যেগুলোর উপর সালাফী মানহাজ প্রতিষ্ঠিত এবং যেগুলো এই ভ্রষ্ট বিদ‘আতী মানহাজের অসারতা প্রমাণ করে। যে মানহাজকে আমি সবচেয়ে নিকৃষ্ট, খারাপ এবং ভয়ঙ্কর বিদ‘আত হিসেবে গণ্য করি। আর মনে করি, তারা যদি কার্যত এই মানহাজকে গ্রহণ করে, তাহলে অবশ্যই তারা ক্বুরআন, সুন্নাহ এবং যাবতীয় শার‘ঈ ‘ইলমকে, বরং যাবতীয় মানবীয় জ্ঞানকে ধ্বংস করে ফেলবে। আল্লাহ’র কাছে এ থেকে পানাহ চাচ্ছি।”
[মাজমূ‘উশ শাইখ রাবী‘; খণ্ড: ১৪; পৃষ্ঠা: ৪৭৭-৪৭৮; দারুল ইমাম আহমাদ, মিশর কর্তৃক প্রকাশিত (তারিখ-বিহীন)]

·
১০ম বক্তব্য:

বর্তমান যুগের শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস, মাদীনাহ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং মাসজিদে নাবাউয়ী’র সম্মানিত মুদার্রিস আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ ইমাম ‘আব্দুল মুহসিন বিন হামাদ আল-‘আব্বাদ আল-বাদর (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৫৩ হি./১৯৩৪ খ্রি.] প্রদত্ত ফাতওয়া—

السؤال:
«هل من منهج السلف: أنى إذا انتقدت مبتدعا ليحذر الناس منه يجب أن أذكر حسناته لكى لا أظلمه؟»
الجواب:
«لا، لا، ما يجب؛ إذا حذرت من بدعة وذكرت البدعة وحذرت منها، فهذا هو المطلوب ولا يلزم أنك تجمع الحسنات وتذكر الحسنات، إنما للإنسان أن يذكر البدعة ويحر منها، وأنه لا يغتر بها».

প্রশ্ন: “এটা সালাফদের মানহাজ যে, আমি যখন বিদ‘আতীর সমালোচনা করব, যাতে করে মানুষ তাঁর থেকে সতর্ক থাকে, তখন আমার জন্য তার ভালো বিষয়গুলো বর্ণনা করা ওয়াজিব গণ্য হবে, যাতে করে আমি তার উপর জুলুম না করে ফেলি?”

উত্তর: “না, না, ওয়াজিব নয়। যখন তুমি বিদ‘আত থেকে সতর্ক করবে, তখন বিদ‘আতটি উল্লেখ করবে এবং তা থেকে সতর্ক করবে। এটিই কাঙ্ক্ষিত বিষয়। তোমার জন্য এটি ওয়াজিব নয় যে, তুমি ভালো গুণগুলো জমা করবে এবং তা বর্ণনা করবে। বরং ব্যক্তির কর্তব্য হচ্ছে সে স্রেফ বিদ‘আত উল্লেখ করবে এবং তা থেকে সতর্ক করবে, যাতে কেউ এর দ্বারা ধোঁকায় পতিত না হয়।”
[১৪১৬ হিজরীর ২০শে যুল ক্বা‘আদাহ শুক্রবারে সুনানে নাসাঈ’র একটি দারস থেকে সংগৃহীত; মাসজিদে নাবাউয়ী’র অডিও ক্লিপ নং: ১৮৯৪২; গৃহীত: ইমাম রাবী‘ আল-মাদখালী (হাফিযাহুল্লাহ), আন-নাসরুল ‘আযীয ‘আলার রাদ্দিল ওয়াজীয; পৃষ্ঠা: ২০; মাজমূ‘উশ শাইখ রাবী‘; খণ্ড: ১০; পৃষ্ঠা: ১৮৩]

আমাদের কাছে ‘আলিমদের বক্তব্য থেকে স্পষ্টরূপে প্রতিভাত হল যে, বিদ‘আতীদের সমালোচনা করতে হলে তাদের ভালো গুণ উল্লেখ করা জরুরি– মর্মের মানহাজ একটি নবআবিষ্কৃত মানহাজ, যার কোন শার‘ঈ ভিত্তি নেই। আল্লাহ হেফাজত করুন।



সুপথপ্রাপ্তির অভিলাষী
এক গুনাহগার বান্দা—

No comments

Theme images by konradlew. Powered by Blogger.